মমতাজুর রহমান, আদমদীঘি: রেলওয়ের লাইসেন্স ও পৌরসভার কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই বগুড়ার সান্তাহার জংশন শহরের মিনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবৈধভাবে বিশাল আকারের দুটি দোকান নির্মাণ করছেন শহরের দুই প্রভাবশালী কাপড় ব্যবসায়ী। বর্তমানে দোকানের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আসলেও রেলওয়ে ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অবৈধ নির্মাণকাজ বন্ধে কোন প্রকার উদ্যেগ গ্রহণ না করায় শহরবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে একই ব্যবসায়ীরা ওই এলাকায় একাধিক জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করেছেন বলে এলাকাবাসির অভিযোগে জানা গেছে ।
এলাকাবাসির অভিযোগে জানা গেছে, সান্তাহার পৌরসভার ওই এলাকায় রেলওয়ের প্রায় দেড় একর জায়গায় পরিত্যাক্ত একটি জলাশয় ছিলো । ৮০ দশকে জাতীয়পার্টির শাসনামলে প্রয়াত মন্ত্রী এবিএম শাহাজাহান জায়গাটি ভরাট করার উদ্যেগ গ্রহণ করে এবং সান্তাহার পৌরসভাকে প্রায় সাত লাখ টাকা বরাদ্দ করেন । পরে পৌরসভা ওই জায়গাই বাসস্ট্যান্ড করার জন্য ভরাট করে এবং রেলওয়ের নিকট ইজারার জন্য আবেদন করে । পরবর্তীতে নানা জটিলতায় ইজারার বিষয়টি ঝুলে গেলে ভরাট এলাকার আশপাশের পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ীরা রেলওয়ের স্থানীয় ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মচারীর সাথে আতাঁত করে জায়গাটি দখল করে দোকান নির্মাণ শুরু করে ।
বর্তমানে রেলওয়েকে বাৎসরিক ক্ষতিপুরুণ দিয়ে কোন প্রকার পৌর অনুমতি ও রেলওয়ের লাইসেন্স ছাড়াই ওই এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধ দোকান নির্মাণ করা হয়েছে । অবৈধ দখল প্রক্রিয়া চলার এক পর্যায়ে এলাকাবাসি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করলে সান্তাহার পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ফিরোজ মো. কামরুল হাসান ওই স্থানে পৌরসভার দখলকৃত জায়গার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয় । বর্তমান মেয়র ও বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেন মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার পর আবারো শুরু হয় দখলবাজি বাসস্ট্যান্ডের জন্য নির্ধারিত জায়গার উত্তর অংশে একই পদ্ধতি অনুসরন করে নির্মাণ করা হয় প্রায় ১০টি দোকান । যা এতদিন বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিলো । হঠাৎ করে বেড়ার আড়ালে সেখানে গুলবর হোসেন ও মোয়াজ্জেম হোসেন নামের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি পৌর প্লান ছাড়াই দোকান নির্মাণ শুরু করেছেন ।
সরেজমিন ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায় গুলবর হোসেন উপস্থিত থেকে অবৈধ দোকান নির্মাণের তদারকি করছেন। লাইসেন্স ও পৌরপ্লান ছাড়া কিভাবে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন জানতে চাইলে গুলবর হোসেন কোন সদত্তুর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে সান্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি ওই সকল দোকান নির্মাণকারীদের কোন পৌর প্লান দেয়নি তিনি এ বিষয়ে রেলওয়ের ভূসম্পদ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সান্তাহার শহরের একাধিক ব্যক্তি বলেন, অবৈধ দোকান মালিকদের বেশিরভাগ বর্তমান মেয়রের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশি হওয়ায় তারা পৌরপ্লান ছাড়াই অবৈধ দোকান নির্মাণ করতে পারছেন । এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে ভুসম্পদ বিভাগের কানুনগো মো. মহসিন ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না দ্রুত ওই দোকানের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে । সম্পাদনা: জেরিন মাশফিক
আপনার মতামত লিখুন :