শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর, ২০১৯, ০২:২৮ রাত
আপডেট : ১৪ নভেম্বর, ২০১৯, ০২:২৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছোঁয়াকে হারিয়ে অঝোরে কাঁদছেন মা নাজমা

মাসুদ আলম : দুই বছরের ছোট্ট আদিবা আক্তার ছোঁয়া! মা-বাবা, ভাই ও নানীর সঙ্গে ট্রেনে চেপেছিলো। এটাই ছিলো তার শেষ যাত্রা কে জানতো। মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা নাজমা আক্তার। ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) দ্বিতীয় তলার সি/ডি ওয়ার্ডের ৫৩ নম্বর বেডে শুয়ে অঝরে কাঁদচ্ছেন নাজমা। তার পাশের পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন স্বামী মহিন আহমেদ সোহেল ও একমাত্র ছেলে নাবিদুল হক নাফিজ (৫)। ছোঁয়ার কথা জিজ্ঞাসা করতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নাজমা।

বুধবার এই প্রতিবেদকে বলেন, রাত ৩টায় হঠাৎ বিকট আওয়াজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চারদিকে অন্ধকার হয়ে আসে। মুহূর্তে মধ্যে ট্রেনের বগি ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। সেসময়ও মেয়ে ছোঁয়াকে বুকের মধ্যে শক্ত করে জড়িয়ে রাখি। কিছুক্ষণ পর দেখি তার শরীর অর্ধেক চাপা পড়ে গেছে। এ সময় বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলেও তাকে বাঁচাতে পারেনি। সব শেষ হয়ে গেছে। খুব শান্ত স্বভাবের ছিলো ছোঁয়া কিছু পেলেই খুব খুশি হতো। তাকে ছাড়া কেমনে বাঁচবো। বড় ছেলে নাফিসের ডান হাত ভেঙ্গে গেছে। নাজমার দুই পা ও বাম হাত ভেঙ্গে গেছে। সোহেলের বাম পায়ের হাড় ভেঙ্গে গেছে। ব্যান্ডেজ নিয়ে একবার মায়ের বেড়ে আরেকবার বাবার বেড়ে বসে সময় পার করছে নাফিজ। নির্বাক হয়ে শুধু এদিক-ওদিন তাকিয়ে থাকে। একধরনের আতঙ্কও তার মধ্যে। সোহেল ও নাজমার বাড়িই হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায়। নাজমা চট্রগ্রামের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চার মাস আগে চাকরি নেন নাজমা। আর সোহেল একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন।

তিনি আরো বলেন, ছুটিতে মা-বাবার সঙ্গে বানিয়াচংয়ে দাদা ও নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলো ছোঁয়া। ছুটি শেষে গত সোমবার সিলেট থেকে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে ট্রেনে করে চট্রগ্রামে যাচ্ছিলো। সঙ্গে ছিলো নাজমার মা রেনু বেগম (৫৫)। সোমবার দিবাগত শেষ রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের কাছে তূর্ণা নিশীথার সঙ্গে উদয়ন ট্রেনটির সংঘর্ষে তারা সবাই আহত হন। তাদের অনুপস্থিতিতে দুই সন্তানকে দেখাশোনা করতেন রেণু। দুর্ঘটনার সময় অধিকাংশ যাত্রী ঘুমন্ত ছিলো।

এদিকে একই ঘটনায় আহত হয়ে নাজমার ডান পাশের বেডে সুমি ও বাম পাশে সুরাইয়া খাতুন চিকিসাধীন রয়েছে। আর ঘটনাস্থলে মারা যান সুমির মা জায়েদা খাতুন।

সুরাইয়া খাতুন বলেন, তার বাড়ি আখাউড়া। মেয়ে জায়েদা খাতুনের বিয়ে হয়েছিলো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। তার স্বামী মুসলিম মিয়া চট্রগ্রামে জাহাজ কাটা শিল্পে কাজ করতেন। চাকরির সুবাদে চট্রগ্রামের পাহাড়তলীতে থাকতেন। গত বৃহস্পতিবার মুসলিম মিয়া মারা যান। মুসলিম মিয়ার দাফন শেষে সোমবার রাতে সিলেট থেকে চট্রগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসে শ্রীমঙ্গল থেকে রওনা দেন তারা। দুর্ঘটনায় জায়েদার দুই ছেলে ইমন ও সুমন এবং দুই মেয়ে সুমি ও মীম আহত হয়। কিন্তু সুমি জানেন না তার মা নেই। সুমি ও ইমন চট্রগ্রামের একটি কলেজে আনার্স পড়ছে। সুমন ছাড়া সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ৬ বছরের মীমের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, ট্রেন দুর্ঘটনায় ৮জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। আরেকজনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। অন্যদের হাত, পা ও কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানের হাড় ভেঙে গেছে। এর মধ্যে কয়েজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়