আরিফুল ইসলাম, সরাইল : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে অরুয়াইল ইউপি কমপ্লেক্স সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে এলাকায় বালু ফেলে তিতাস নদী দখল করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি নদী দখল করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এতে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। নৌপথ সংকুচিত হয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
এদিকে চোখের সামনে নদী দখলের ঘটনায় স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যান নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। এতে তাদের দায়িত্ব নিয়ে স্থানীয় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অরুয়াইল বাজারের দক্ষিণ পাশে সাত'শ ফুট দৈর্ঘ্য বাঁশের সাঁকো এলাকায় ড্রেজার মেশিনে বালু ফেলে তিতাস নদী ভরাট করছেন ইউপির কাকরিয়া গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে মনির হোসেন। এর পাশেই নদী ভরাট করেছেন ইউপির রাণীদিয়া গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে হেফজুল মিয়া। অপরদিকে একই এলাকায় সরকারি খাস জমি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে বালু ফেলেছেন রাণীদিয়া গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে জসিম উদ্দিন। দখলদাররা জানান, এখানে দখলীকৃত তিনস্থানে তিনটি 'ডক ইয়ার্ড' নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। তবে এতে সরকারি জায়গা দখলের ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হোননি। দখলদারদের দাবি, এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে।
এদিকে অরুয়াইল বাজার এলাকায় সেতুর নীচে একাধিক স্থানে বালু ফেলে নদী ভরাট করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবু তালেব সহ প্রভাবশালী কয়েকজন। তারা ইতোমধ্যে বাজারের নৌঘাট দখল করে সেখানে বালু ফেলে তিতাস নদীর জায়গা দখলে নিয়েছেন। সেই জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে তিতাস নদীর ওই জায়গা দখল হওয়ায় নদীর প্রশস্ততা কমে জায়গাটি সরু খালের মতো হয়ে গেছে। এতে পানির প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। বিঘ্ন ঘটছে নৌযান চলাচলে।
অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া সাংবাদিকদের জানান, তারা (দখলদার) নদী ভরাট করে 'ডক ইয়ার্ড' নির্মাণ করতে আমার সহযোগীতা চেয়েছিলো। এতে আমি রাজি হয়নি। তাদের নদী ভরাট ও খাস জমি দখলের ব্যাপারে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এদিকে অরুয়াইল এলাকায় নদী দখল ও খাস জায়গা অবৈধ দখলের ব্যাপারে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) উপজেলা আইনশৃংখলা সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়। সভার সভাপতি ও ইউএনও'র দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াংকা জানান, অরুয়াইল এলাকায় সকল অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। সরকারি জায়গা দখলকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ইউএনও নিজে এই অভিযানের নেতৃত্বে থাকবেন বলে তিনি জানান।
অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস জানান, সরাইলের অরুয়াইল এলাকায় নদী দখলের বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমরা সরেজমিন গিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সকল দখলদারকে উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া চলছে।সম্পাদনা:জেরিন মাশফিক
আপনার মতামত লিখুন :