স্বকৃত নোমান : আমার টাকা নেই। থাকলে একটা সাহিত্য-উৎসবের আয়োজন করতাম। নাম দিতাম ‘ঢাকা লিট অ্যান্ড ড্রিংক ফেস্ট’ উৎসব মাঠের এক প্রান্তে করতাম একটা মঞ্চ, যেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আগত লেখকরা মনের আনন্দে যেমন খুশি তেমন নাচবে, গাইবে। ঢাকা ক্লাব, হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল ও সোনারগাঁও হোটেল তিন দিনের জন্য ভাড়া নিয়ে নিতাম।
লেখকরা সেখানে রাতভর ড্রিংক করবে। ব্ল্যাক লেবেল, ডাবল ব্ল্যাক, রেড লেবেল, ওয়াইন, ম্যাক্সিকান টাকিলা, কেরু¯যার যা খুশি খাবে। খেতে খেতে বিশ্বসাহিত্য নিয়ে কথা বলবে, যেমন খুশি তেমন গাইবে, নাচবে, উল্লাস করবে। শহরের বড় বড় হোমরা-চোমরাদের দেখিয়ে দিতাম, লেখকরা ফকির না, শুধু কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ঘোরে না, তারা এসব ফাইভ স্টার হোটেলে এসেও আনন্দ-ফুর্তি করতে পারে। শুদ্ধতা! যেদিকে তাকাই সর্বত্রই শুদ্ধতা। সর্বত্রই অবদমন। সর্বত্রই শ্লীল-অশ্লীল।
শুদ্ধতা শুদ্ধতা করতে করতে, শ্লীল-অশ্লীল করতে করতে, অবদমনে থাকতে থাকতে কলমের ডগা দিয়ে আর লেখা বেরোয় না। লিখতে গেলেই সামনে শুদ্ধতা এসে দাঁড়ায়, অবদমন এসে দাঁড়ায়, শ্লীল-অশ্লীল এসে দাঁড়ায়। দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাওয়া করাটা অশ্লীল নয়, বোমা মেরে মানুষ মারা অশ্লীল নয়, চাপাতি দিয়ে গলা কাটা অশ্লীল নয়, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা করে উচ্ছেদ করা অশ্লীল নয়, সর্বক্ষণ হিংসা ছড়ানোটা অশ্লীল নয়; ডিনার পার্টিতে মনের আনন্দে নাচাটা অশ্লীল। এটা নাকি বিজাতীয় সংস্কৃতি। জাতীয় সংস্কৃতি কোনটা? মানুষ প্রাণের আনন্দে নাচছে, গাইছে, হাততালি দিচ্ছে¯এই সংস্কৃতি যে জাতিরই হোক না, তা সুন্দর, পবিত্র।
আপনার মতামত লিখুন :