মাজহারুল ইসলাম : ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের কৃষি ও কৃষক। শীতকালীন সবজি থেকে শুরু করে পাকা-আধাপাকা আমন ধানের ক্ষতিতে দুর্গত এলাকার কৃষকের মাথায় দুশ্চিন্তা ভর করেছে। দেশের ১৩ জেলায় প্রায় ৩ লাখ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা দেবে। জনকণ্ঠ
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ শনিবার রাতে দেশের উপকূলে আঘাত হানে। ঝড়ে ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং থেকে বলা হয়েছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রাথমিক প্রতিবেদন করা হয়েছে। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের কবলে দেশের ১৩ জেলা আক্রান্ত হয়েছে। যেখানে মোট ২ লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি রয়েছে। এরমধ্যে রোপা আমন, খেসারি ও পানের বরোজ, রবিশস্য ও শীতকালীন বিভিন্ন সবজি রয়েছে। তবে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে আজ সকালে মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক।
প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক চন্ডীদাস কু-ু জানান, ২ লাখ ৮৯ হাজার জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত আর ক্ষতিগ্রস্ত এক কথা নয়। আমরা মাঠ পর্যায় থেকে যে তথ্য পাচ্ছি সে হিসেবে এটি আমাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন। আমরা প্রথমে ১৬ জেলা আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জেনেছিলাম। পরে জেনেছি ১৩ জেলার কথা। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব পাঠাচ্ছেন।
বিভিন্ন জেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ঝড়টি যেভাবে আঘাত হানার কথা ছিলো, সেভাবে আঘাত হানেনি। এতে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। পূর্ণ শক্তির ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে আরও বেশি ক্ষতি হতো বলেও মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুরে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ১৩ জেলায় মোট ফসলি জমি ১২ লাখ ৯৯ হাজার ২৭৩ হেক্টর। দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬ হেক্টর জমির ফসল। যা এসব জেলার মোট জমির শতকরা ২২.২৪ শতাংশ।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে মন্ত্রী বিস্তারিত জানাবেন। তবে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে আছে। রবি মৌসুমে সার বীজ যা প্রয়োজন সবই দেয়া হবে। এছাড়াও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি যাতে কমিয়ে আনা যায় সে লক্ষ্যে কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকেও দেয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ। এছাড়াও সারাক্ষণ খোলা রয়েছে কৃষি কল সেন্টার। যেখানে ফোন করেও সেবা পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান একাধিক কর্মকর্তা।
সম্পাদনা: ইয়াসিন আরাফাত
আপনার মতামত লিখুন :