শিরোনাম

প্রকাশিত : ১০ নভেম্বর, ২০১৯, ০৬:৫০ সকাল
আপডেট : ১০ নভেম্বর, ২০১৯, ০৬:৫০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে আমরা এখন কী দেখছি

 

কামরুল হাসান মামুন : সমাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে হতে হয় উদাহরণীয় এবং অনুকরণীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ, মানুষজনের চালচলন, কথাবার্তা, আচার-আচরণ সব কিছুই উদাহরণীয় এবং অনুকরণীয় হওয়া উচিত। ক্যাম্পাসের ভবনগুলোর আর্কিটেকচারাল ডিজাইন পর্যন্ত হওয়া উচিত সেই রকম উদাহরণীয় এবং অনুকরণীয়। বিশেষ করে শিক্ষকদের অবশ্যই উদাহরণীয় এবং অনুকরণীয় হতে হবে নতুবা ছাত্ররা শিখবে কোথা থেকে? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে এখন আমরা কী দেখছি? শিক্ষক হয়ে একদল ছাত্র লেলিয়ে দেয়া হয় আরেকদল ছাত্র এবং শিক্ষককের গায়ে হাত তুলতে। তারপর আবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নেতা হলো উপাচার্য কারণ তার ক্ষমতা এমন যে ইচ্ছে করলে একটি গরুকেও শিক্ষক বানাতে পারবেন। একটি ছাগলকেও প্রমোশন দিতে পারবেন। বিষয়ের শিক্ষক হন বা না হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়োগ ও প্রমোশন বোর্ডে উপাচার্য কিংবা উপ-উপাচার্য থাকেন। শিক্ষক নিয়োগ যদি হয় পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে আর ভিসি যদি হন আরবি ফার্সি কিংবা উর্দু বিভাগের তবুও তিনি থাকবেন। দেখেন তো পৃথিবীর দ্বিতীয় আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে এমনটা ঘটে?

সব ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভুত করার কারণেই আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এতো সমস্যা। এতো ক্ষমতা থাকার কারণেই তাকে ঘিরে হয় তোষামোদীর তেলের কারখানা। একই সঙ্গে তৈরি হয় বঞ্চিতদের হতাশা ও হাহাকার। আরেকদল শিক্ষক মুখিয়ে থাকে কীভাবে বর্তমান ভিসিকে লেঙ মেরে ফেলে দিয়ে নিজে ভিসি হবে। এই পদটির যদি এতো ক্ষমতা না থাকতো এটা নিয়ে এতো হৈচৈ হতো না। ক্ষমতা বেশি বলেই যেভাবেই হোক এই পদটা একবার পেয়ে গেলে সেটাকে ধরে রাখতেই হবে।
পৃথিবীর উন্নত দেশের ভিসিদের এতো ক্ষমতা নেই ফলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা কেউ জানেই না কে তাদের ভিসি। এতো ক্ষমতা যদি না থাকতো সামান্য অসম্মান পেলেই পদত্যাগ করতে দ্বিধা করতো না।

সভ্য দেশের সরকারের মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী তো সামান্য ট্রেন দুর্ঘটনা হলে পরই তার দায় নিয়ে পদত্যাগ করে বসে। আর একজন ভিসি যার বিরুদ্ধে ছাত্রনেতাদের উন্নয়ন কাজের একটি অংশ উৎকোচ হিসেবে বণ্টন করে দেয়ার অভিযোগ উঠে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ছাত্র সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতাদের পদচ্যুত করা হয়েছে। তাহলে এই ভিসিকে কেন নয়? ছাত্র-শিক্ষকদের একটি বড় অংশ ভিসির পদত্যাগ চাচ্ছে তারপরও কেন এই পদকে আঁকড়ে থাকতে হবে? এটা তো নির্লজ্জতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে।আমার মতে, প্রথমত বাংলাদেশের সব ভিসির ক্ষমতাকে কেটেছেঁটে ছোট করতে হবে। দ্বিতীয়ত শিক্ষকদের সরাসরি লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি করতে পারার ক্ষেত্রে লাগাম টানতে হবে। তৃতীয়ত, ভিসি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে যুগোপযোগী করতে হবে। তাহলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সমস্যা তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটই থাকবে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই হয়েছে স্বৈরাচার ব্যবস্থা তৈরির সূতিকাগার। তাহলে রাষ্ট্রে কেন হবে না? ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়