শিরোনাম
◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ০৮ নভেম্বর, ২০১৯, ০৪:৩৫ সকাল
আপডেট : ০৮ নভেম্বর, ২০১৯, ০৪:৩৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন, ২০১৩ ও বিধিমালা, ২০১৭’ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ পুষ্টি সমিতির উদ্যোগে এবং জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশন (বিবিএফ) এর সহায়তায় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের সভাকক্ষে বিভিন্ন টেলিভিশন ও সংবাদপত্র হতে আগত প্রায় ৪০ জন সাংবাদিকগণের অংশগ্রহণে ‘মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন, ২০১৩ ও বিধিমালা, ২০১৭’ বিষয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডাঃ মোঃ খলিলুর রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুষ্টি সমিতির সভাপতি, অধ্যাপক ডঃ এস কে রায়।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুষ্টি সমিতি এর কোষাধক্ষ্য মো: ইসহাক আলী এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক জনাব খুরশীদ জাহান।

বাংলাদেশ পুষ্টি সমিতির প্রেসিডেন্ট, অধ্যাপক ডঃ এস কে রায় আইন ও বিধিমালা অনুসারে উল্লেখযোগ্য বিধি নিষেধ সমূহ উপস্থাপন করেন-

মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য বা উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদির আমদানি, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন, বিপণন, বিক্রয় বা বিতরণের বিষয়ে-

১. কোন আমদানিকারী, স্থানীয়ভাবে উৎপাদনকারী, বিপণনকারী, বিক্রয় বা বিতরণকারী বা কোন ব্যক্তি, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কোন ধরনের বিজ্ঞাপন মুদ্রণ, প্রদর্শন, প্রচার বা প্রকাশ বা অনুরূপ কোন কাজ করতে পরবে না।

২.কোন ধরনের জনসচেতনতামূলক কাজ করতে পারবে না।

৩. স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, স্বাস্থ্য, পুষ্টি বা শিক্ষা ক্ষেত্রের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি, ছাত্র-ছাত্রী বা তাহাদের পরিবারের কোন সদস্যের নিকট কোন লিফলেট, হ্যান্ডবিল বা অনুরূপ কোন দলিল, আর্থিক প্রলোভন বা অন্য কোন উপহার বিতরণ করতে পারবে না।

৪. কোন সেমিনার, কনফারেন্স, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, বৈজ্ঞানিক সভা, শিক্ষা সফর বা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানসহ উচ্চ শিক্ষায় বা কোন গবেষণামূলক কর্মকান্ডের আয়োজন ও অংশগ্রহণের জন্য আর্থিক বা অন্য কোন সুবিধা প্রদান করতে পারবে না।

শিশুর জীবন রক্ষা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাসকরণের লক্ষ্যে একান্তভাবে অপরিহার্য বিবেচিত হলে (সকল উপায় অবলম্বন এবং চেষ্টা করার পরও মায়ের দুধ পাওয়া না গেলে), কেবলমাত্র নিবন্ধিত ও রেজিস্টারভুক্ত কোন মেডিকেল চিকিৎসক, উপযুক্ত প্রমাণাদির ভিত্তিতে, মাতৃদুগ্ধ বিকল্প খাদ্যের কোন ব্যবস্থাপত্র প্রদানসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করতে পারবেন। শিশুর বয়স ৬ মাসের পর থেকেই সে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরী বিভিন্ন বাড়তি খাবার খেতে পারে। এ সময় শুধুমাত্র ব্যবসায়িক চিন্তা ভাবনা থেকেই মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশু খাদ্যের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশু খাদ্য, ইত্যাদির ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে মা-বাবাকে অবহিত করতে ও জনসাধারনের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এর ধারণপাত্র ও মোড়কে, ”শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাসকরণের উদ্দেশ্যে, “চঅঞঐঙএঊঘওঈ গওঈজঙঙজএঅঘওঝগ” মাতৃদুগ্ধ বিকল্প গুঁড়া বা প্রক্রিয়াজাত দুধে (চড়ফিবৎবফ ওহভধহঃ ঋড়ৎসঁষধ) থাকতে পারে বলিয়া উহা উপযুক্ত পদ্ধতিতে প্রস্তুত করিতে হইবে” শীর্ষক বিবরন মুদ্রিত থাকতে হবে।

আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী কোন মাতৃদুগ্ধ বিকল্প শিশু খাদ্য এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন পায় নাই।

যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের কোন বিধান লংঘন করেন, তা হলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড বা অনূর্ধ্ব ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। কোন শিশু অসুস্থ হলে বা মৃত্যুবরণ করলে তা হবে আইনের অধীন একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত গুঁড়াদুধ, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য বা উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদির প্রস্তুতকৃত কোম্পানী ১০ (দশ) বৎসর কারাদন্ড বা অনূর্ধ্ব ৫০,০০০০০ (পঁঞ্চাশ লক্ষ) টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে ক্ষতিগ্রস্থ শিশুর পরিবারকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রদান করা হবে।

প্রশ্নোত্তর পর্বে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘনের সংখ্যা কত এবং কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে? এর উত্তরে জানানো হয় যে, বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাইন্ডেশন সারা দেশে ৮টি বিভাগে ৩২ জন কর্মকর্তার মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মনিটরিং এর ফলাফল জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করা পূর্বক আইন লঙ্ঘনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

সভার মূল বক্তব্য উপস্থাপন কালে বাংলাদেশ পুষ্টি সমিতির প্রেসিডেন্ট, অধ্যাপক ডঃ এস কে রায় বলেন, মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন, ২০১৩ ও বিধিমালা, ২০১৭ এর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি যেন সবাই জানে এবং মায়ের দুধের প্রচার, প্রসার ও সহায়তায় সরকারের সদিচ্ছা আপনাদের মাঝে তুলে ধরাই আমাদের আজকের এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। তিনি আরও বলেন, আপনারা যদি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন তবে জনগন, সরকার ও বিভিন্ন মহল যারা এ বিষয়ে কাজ করে থাকেন তাদের কাছে এই আইনের বিধি-নিষেধগুলো সহজে পৌঁছাবে এবং তবেই এই আয়োজনের উদ্দেশ্য সার্থক হবে। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাইন্ডেশন আইন নিয়ে কাজ করছে এবং বাংলাদেশ পুষ্টি সমিতিও এখন থেকে নিয়মিত এ বিষয়ে কাজ করে যাবে।

প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডাঃ মোঃ খলিলুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকারের এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতকল্পে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন-

১. কেন্দ্রীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মাতৃদুগ্ধ বিকল্প আইন, ২০১৩ এর মনিটরিং এর জন্য সকল বিভাগে ওয়ার্কশপের মাধ্যমে মনিটরিং চেকলিস্ট ও মনিটরিং পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
২. বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অচিরেই ঢাকায় একটি মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
৩. সকল পর্যায়ে আইনের বিধি-নিষেধ সম্বলিত পত্র প্রেরন করা হবে।

বাংলাদেশ পুষ্টি সমিতির সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভা সমাপ্ত করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়