মঈন মোশাররফ : দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে রয়েছে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারসাজি মিয়ানমার থেকে যেই পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে ৪২ টাকায়, ভোক্তা পর্যায়ে তা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে। অভিযোগ দামের এই কারসাজিতে জড়িত আমাদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও আড়তদাররা। ডয়চে ভেলে
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এই দর বৃদ্ধির পিছনে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমাদানিকারক ১২ জনের একটি সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছে। তারা কক্সবাজারের টেকনাফভিত্তিক আমদানিকারক। চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম খাতুনগঞ্জে অভিযান চালাতে গিয়ে এই সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করেন।
এ প্রসঙ্গে তৌহিদুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, আমরা কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখেছি আমদানিকারকেরা এখন মিয়ানমার থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ আমদানি করে। কিন্তু আড়তদারদের মাধ্যমে তারা প্রতি কেজি পাইকারিতে ১১০ টাকায় বিক্রি করে। আর খুচরা পর্যায়ে এই পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১৫০ টাকা কেজিতে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের হিসাবে রোববার মিয়ানমার থেকে ৬০ ট্রাক পেঁয়াজ এসেছে। প্রতি ট্রাকে ২০ টন হিসাবে তা এক হা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই সিন্ডিকেটে আমদানিকারকের সঙ্গে কমিশন এজেন্ট এবং টেকনাফের কিছু সিএন্ডএফ এজেন্টও জড়িত। তারা নানা কাহিনী তৈরি করছে। মিয়ানমারে ৪২ টাকার ওপরে পেঁয়াজ নেই।
তিনি জানান, আমরা ১২ জনের তালিকা পাঠিয়েছি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও একটি টিম ঢাকা থেকে পাঠানো হয়েছে মনিটর করার জন্য।
খাতুনগঞ্জের আড়তদার আবুল বাশার দাবি করেন পেঁয়াজের পাইকারি দামে তাদের কোনো হাত নেই। এটা যারা আমদানি করেন তারাই ঠিক করে দেন। তিনি বলেন, আমরা কেজিতে প্রতি ৫০-৬০ পয়সা কমিশন পাই। আমদানিকারকরা আমাদের বাজার দেখে যে দাম বলে সেই দামে আমরা বিক্রি করি। পেঁয়াজের আমদানি মূল্যের ওপর আমাদের ধারণা নাই, আমরা কমিশন পাই মাত্র।
মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিএন্ডএফ এজেন্ট টেকনাফের শওকত আলম দাবি করেন, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির দুইটি হিসাব আছে। অফিসিয়াল রেট প্রতি টন ৫০০ ডলার, কিন্তু এখন আমাদের কিনতে হচ্ছে ৮০০ ডলারে। এখানে এলসি খুলতে হয় না। নগদ টাকা নিয়ে যাই, পেঁয়াজ নিয়ে আসি। আমাদের এখন প্রতি কেজি কিনতে প্রায় ৮০ টাকা খরচ হয়। তাই কোজিতে ১০-১৫ টাকাতো ব্যবসা করবই। তবে এক পর্যায়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারে এক খাতা (স্থানীয় মাপ) পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা। এক খাতায় দেড় কেজি। সেই হিসাবে এক কেজির দাম ৬০ টাকা।
তিনি আরো দাবি করেন, মিয়ানমারের কিছু বড় ব্যবসায়ী কক্সবাজারেও ব্যবসা করে। তারা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের ব্যবসা করছে। আমরা এসব করি না।
আপনার মতামত লিখুন :