শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ০৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ দুপুর
আপডেট : ০৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চৌমুহনীতে দাঁড়িয়ে আছে ২০ দলীয় জোট, বললেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম (ভিডিও)

টিভিএনএ রিপোর্ট : মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সভাপতি। অত্যন্ত স্পষ্টভাষী ও নিখুত রাজনৈতিক বিশ্লেষণের জন্য তিনি দেশের সাধারণ মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। মাত্র ১২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে নিজ জেলা চট্টগ্রামসহ সারা দেশেই রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার প্রমাণ দিয়েছেন।
সম্প্রতি ২০ দলীয় জোটের রাজনীতি, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। সেই আলোচনার উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো-

প্রশ্নঃ ২০ দলীয় জোট নেত্রী কারাগারে আছেন প্রায় দুই বছর।আপনারা বলছেন তাকে রাজনৈতিক কারণে অন্যায়ভাবে বন্দী রাখা হয়েছে।কিন্তু জোটের অন্যতম শরিক কল্যাণ পার্টির পক্ষ থেকে তার মুক্তির বিষয়ে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না কেন?

সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমঃ খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন করতে না পারা এটি একক ব্যক্তি বা দলের নয়, জোটের ব্যর্থতা। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক ও কর্মসূচি দেয়া হয়ে থাকলেও নির্বাচনের পর জোটের বৈঠক খুবই কম হয়েছে। তবে কল্যাণ পার্টি নতুন ও ছোট দল হলেও তার কণ্ঠস্বর অত্যন্ত জোরালো এবং শক্তিশালী। আমরা যেকোন সভা সমাবেশ, মানবন্ধন, টকশো বা পত্রপত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে জোট নেত্রীর মুক্তির বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরছি। একইসাথে একথাও বলছি, যদি নেত্রীর কোনো কিছু হয় তাহলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। আরও একটু হালকা মেজাজে বলেছি এর দায় গোপালগঞ্জবাসীকে নিতে হবে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি গোপালগঞ্জে।

প্রশ্নঃ সরকারের পক্ষ থেকে তো বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আইনি বিষয়, এর সমাধান আইনের ধ্যমেই হতে হবে।

সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমঃ খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিতে যত প্রকার অজুহাত দেয়া যায় সরকার তাই উপস্থাপন করবে। পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, ফ্যাসিস্ট ও একনায়ক সরকারগুলো জনপ্রিয় নেতা নেত্রীদের জন্য এধরনের ব্যবস্থাই গ্রহণ করে থাকে। আমি বিশ্বাস করি নেত্রীর স্বাস্থ্য ভালো নেই। আমি আগে থেকে নেত্রীর যেসব অসুখ রয়েছে সেসব বিষয়ে জানি। তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সরকার ও পরিবারের পক্ষ থেকে দুই রকম বক্তব্য আসছে। তবে তার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের নজর ও গুরুত্ব দেয়া উচিত।

প্রশ্নঃ কিন্তু মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে খালেদা জিয়াকে নিয় আশঙ্কা নেই। তবে জীবন মৃত্যু আল্লাহর হাতে।

সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমঃ নিন্দনীয় একটি বক্তব্য দিয়েছে। এই বক্তব্য আমরা গ্রহণ করছি না, প্রত্যাখ্যান করছি।

প্রশ্নঃ ঐক্যফ্রন্ট হওয়ার পর ২০ দলীয় জোটের গুরুত্ব কমে গেছে বলেই মনে হচ্ছে, এই জোটের ভবিষ্যৎ কী?
সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমঃ ২০ দলীয় জোট এখন একটি সংবেদনশীল চৌমুহনী বা চার রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। যখন ঐক্যফ্রন্ট গঠনের বিষয়ে আলোচনা করা তখন এই সম্পর্কে আমাদের সাথে কোনও আলোচনা হয়নি। কার সঙ্গে বা কতদিনের জন্য এই ঐক্য কিছুই আমরা শরিকরা জানি না।

ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি গিয়েছে, আমাদের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল তবে আমরা যাইনি। ২০ দলীয় জোট যেনো তাৎক্ষনিক ভেঙ্গে না যায় তাই সেসময় আমিই একটি কৌশলগত প্রস্তাব দেই। জোটের সভায় বলি এখন সবার যাওয়া দরকার নেই, বিএনপি একাই অংশ নিক। তবে এখন মনে হচ্ছে ২০ দলীয় জোটটি অকার্যকর হোক বা ভেঙ্গে যাক সেটি কেউ বা কোনো কোনো মহল চাচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে। ২০ দলীয় জোটের এই দুরবস্থার জন্য শুধুমাত্র ঐক্যফ্রন্টকেই দায়ী করলে চলবে না, নিজেদের আত্মসমালোচনা করারও দরকার আছে।

প্রশ্নঃ বিএনপি অনেক ইস্যু পেলেও সরকার বিরোধী কোনও আন্দোলন করতে পারেনি, এই ব্যর্থতা কার?

সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমঃ আমার মনে হয় কোনো ব্যক্তি নয়, সমষ্টিগত ব্যর্থতা এটি। আরও মনে হয় বিএনপি এখন দল গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে। যদিও এই দল গোছানোর কাজে হাত দিয়েছে পাঁচ বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটি সম্ভব হয়নি। তবে এই ব্যর্থতার জন্য সরকারি দল ও সরকারের মনোভাব, নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধে মামলা এসব বিষয় দায়ী।

প্রশ্নঃ অনেকেই বলেন ২০ দলীয় জোটকে অকার্যকর করতেই ঐক্যফ্রন্টের জন্ম। আর বিএনপি সেই ফাঁদে পা দিয়েছে।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমঃ আমি যেহেতু মনোবিজ্ঞানী না, তাই এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরও দিতে পারছি না। তবে এটুকু বলতে পারি ঐক্যফ্রন্ট সৃস্টির পর বিএনপি ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্ট কোনো দিকেই ভারসাম্য রাখতে পারছে না। বরং তাদের মনোযোগের পাল্লা ঐক্যফ্রন্টের দিকেই ভারি ছিল। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের মাঝে ব্যক্তিত্বের সংঘাত, দলীয় শৃঙ্খলা বিনষ্ট সহ বেশ কিছু আভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। তবে আমার মনে হয় ২০ দলীয় জোটকে আবারও কার্যকর করতে আত্মসমালোচনায় সংশোধনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।

আমাদের কে সময় দেবার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়