দেবদুলাল মুন্না: দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন করতে গিয়ে জেল খেটেছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৮৩ সালে তাকে আর তার এক বন্ধুকে জেলে পাঠানো হয়েছিল খুনের চেষ্টার অভিযোগে। ২০১৬ সালে হিন্দুস্থান টাইমস-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এমনই জানিয়েছিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছিলেন, ‘কানহাইয়া কুমার, উমর খালিদ, অভিজিৎ বানার্জির কথা মনে পড়ে? জেএনইউ ক্যাম্পাসকে দেশদ্রোহের আখড়া বানানোর অভিযোগে জেলে পাঠানো হয়েছিল তিন বাম ছাত্র নেতাকে। ১৯৮৩তে আমাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছিল। খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।’ এ তথ্য দিয়েছে গতকাল মঙ্গলবার জি নিউজ।
জি নিউজ জানায়, ওই সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন বাম ঘেঁষা ছিল বলে ওই পুলিশি কার্যকলাপকে পিছন থেকে সমর্থন করেছিল কেন্দ্রের কংগ্রেসি সরকার।’
তিনি ওই সক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ভর্তি প্রক্রিয়া বদলানোর দাবিতে আন্দোলন হচ্ছিল। ফি এতটাই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল যে তা সামলানো গ্রামীণ এলাকা থেকে পড়তে আসা ছেলেমেয়েদের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ছাত্র সংসদ এর প্রতিবাদ করায় সংসদ সভাপতিকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তখনই ছাত্র আন্দোলন আরও তীব্র হয়। সেই আন্দোলন দমন করতেই পুলিশ ঢোকে ক্যাম্পাসে। আমাদের মারতে মারতে জেলে নিয়ে যাওয়া হয় জেলে। সন্দেহ নেই এতে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদত ছিল।
পুলিশ বলেছিল, ‘আমরা বস। আমাদের কথার উপর কথা বলা যাবে না।’ সাউথপয়েন্টের পর প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশুনা করেন অভিজিৎ। এরপর দিল্লির জেএনইউ। অভিজিতের মা রমলাদেবী গতকাল মঙ্গলবার জি নিউজকে জানান, ছোটবেলায় বস্তির ছেলেদের সঙ্গে রাস্তায় খেলত অভিজিৎ। পরিবার আটকায়নি। সেই সময় থেকেই গরিবি, অভাব নিয়ে কৌতূহল ছিল। যত পথ এগিয়েছেন অভিজিৎ ততো দারিদ্র নিরসনের সন্ধান পাওয়ার সন্ধানে এগিয়েছেন। তাই গ্রামীণ ছাত্রছাত্রীদের অতিরিক্ত ফি-র বোঝা তাঁকে হয়তো অমোঘ তাগিদেই আন্দোলনের সামিল করে দিয়েছিল। ৮৩-তে জেলে যাওয়া অর্থনীতির ছাত্র ৩৬ বছর পর নোবেল জিতলেন।
আপনার মতামত লিখুন :