শিরোনাম
◈ সিলেটে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ২ ◈ থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ ◈ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় ◈ শিক্ষক নিয়োগ: ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি, ঢাবি শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৫ ◈ বিদ্যুৎ-গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না ◈ রোববার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  ◈ নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি ◈ উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হতে পারে: সিইসি ◈ ভারতের রপ্তানি করা খাদ্যদ্রব্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পেয়েছে ইইউ ◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের স্বাক্ষর

প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ০৬:৩৩ সকাল
আপডেট : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ০৬:৩৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অভিজিতের সাথে প্রেমের কারণে নোবেলজয়ী এস্থার ডাফলো হয়ে উঠেন অর্থনীতিবিদ

দেবদুলাল মুন্না : ফ্রান্সের মেয়ে এস্থার ডাফলো হতে চেয়েছিলেন ইতিহাসবিদ। কিন্তু অভিজিতের সঙ্গে প্রেমই তাকে যেন গন্তব্য পাল্টে দিলো। হয়ে উঠলেন অর্থনীতিবিদ। বিশ্বে দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে স্বামী অভিজিতের সঙ্গে নোবেল পেয়েছেন তিনিও। এস্থারই অর্থনীতিতে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নোবেল প্রাপক। অর্থনীতিতে একই সঙ্গে একই বছর স্বামী-স্ত্রী যুগ্মভাবে নোবেল প্রাপ্তি এই প্রথম।

১৯০৩ সালে পদার্থবিদ্যায় তেজস্ক্রিয়তার উপর গবেষণায় স্বামী পিয়ের কুরির সঙ্গে নোবেল পেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী মেরি কুরি। মাইক্রো-ইকনমিক্স নিয়েই মূলত গবেষণা এস্থারের। ১৯৭২ সালে প্যারিসে জন্ম এস্থারের। বাবা মাইকেল ডাফলো অঙ্কের অধ্যাপক। মা ডাক্তার। ছোট থেকেই ইতিহাসের নানা বিষয় টানত এস্থারকে। গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্সের দৈনিক ‘দ্য পিয়ারো’ ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফ্রন্টিয়ারকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বলেন, ‘ যখন বয়স আট বছর, চেয়েছিলাম ইতিহাসবিদ হতে। ইউনিভার্সিটিতে আমার বিষয়ও ছিল ইতিহাস। ১৯৯৩ সালে মস্কোতে দশ মাস থেকে তিনি অধ্যাপনা করেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাস, রাজনীতি নিয়ে চর্চা শুরু করি। একই সঙ্গে আমার আকর্ষণের বিষয় হয়ে ওঠে অর্থনীতি। ইউনিভার্সিটি থেকে একই সঙ্গে ইতিহাস ও অর্থনীতি নিয়ে ডিগ্রি লাভ করি। কিন্তু অর্থনীতিবিদ হবো এটি ভাবিনি কখনো।

১৯৯৯ সালে ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা শেষ করি। রিসার্চ স্কলার থাকার সময়েই আমার পছন্দের অধ্যাপক ছিলো অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জোসুয়া অ্যাঙ্গরিস্ট। অভিজিতের তত্ত¡াবধানেই বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা শুরু করি। সে ই আমাকে বলে যে , অর্থনীতিই সব কিছুর চালিকাশক্তি। সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনীতির। তার একথা আমাকে অর্থনীতিবিদ হতে উদ্বুদ্ধ করে। এর কয়েকবছর পরই অভিজিতের তার ভারতীয় স্ত্রী অরুন্ধতীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়। সে তখন কাজে একটু অমনোযোগী হয়ে পড়েছিল। সেসময় এমআইটিতেই অধ্যাপক হিসেবে আমিও যোগ দিই। আগে ছিলাম ছাত্রী পরে সহকর্মী। সেসময়টায় আমি অভিজিৎকে অনেক সঙ্গতা দিয়েছি। আমরা গবেষণার কাজে ¯øাম এলাকাতে যেতাম। সেসময়ই আমাদের প্রেমের সম্পর্ক হয়।

২০০৩ সালে এমআইটিতেই ‘পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাব’ তৈরি করি। অভিজিতের সঙ্গে এই ল্যাবেই অর্থনীতির নানা বিষয় নিয়ে অন্তত ২০০টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। পেশা এবং গবেষণা ছাপিয়ে সম্পর্কের গভীরতা আরও গাঢ হয়। একসঙ্গে জীবনের পথে চলার সিদ্ধান্ত নিই দুজনে। ২০১০ সালে জন্য ‘জন বেটস ক্লার্ক মেডেল’ পাই। ওই বছরেই ইউনিভার্সিটি অব ক্যাথলিক দে লাওভেন থেকে সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়ে যাই। সমাজ বিজ্ঞান এবং অর্থনীতিতে ইনফোসিস পুরস্কার (Infosys Prize) পাই ২০১৪ সালে।

জীবনের যে কোনও পর্যায়েই শক্ত খুঁটির মতো পাশে ছিলো স্বামী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।’

২০০৮ সালে বিশ্বের ১০০ জন মেধাবী মানুষের মধ্যে সামনের সারিতেই এস্থার ডাফলোর নাম লেখে আমেরিকার ম্যাগাজিন ‘ফরেন পলিসি’। ‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এর তালিকায় বিশ্বের সেরা আট অর্থনীতিবিদের মধ্যে নাম ওঠে এস্থারের। ২০১১ সালে ‘টাইম ম্যাগাজিন’-এর প্রকাশিত বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকাতেও প্রথম সারিতেই দেখা যায় এস্থার ডাফলোর নাম। তাঁর লেখা প্রথম বই ২০০৬ সালে। Education and HIV/AIDS Prevention: Evidence from a Randomized Evaluation in Western Kenya বেশ জনপ্রিয় হয়। ২০১১ সালে স্বামী অভিজিতের সঙ্গে লিখেছিলেন Poor Economics: Rethinking poverty and the ways to end it। এই বই গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দেয়। ২০১২ সালে এই বইয়ের জন্য স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই ‘জেরাল্ড লোয়েব অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। এস্থার-অভিজিতের লেখা Good Economics for Hard Times: Better Answers to Our Biggest Problems প্রকাশিত হতে চলেছে চলতি বছরের নভেম্বরে।

নোবেল কমিটির ঘোষণার পরে এস্থার ডাফলো ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় একই সঙ্গে বলেন, ‘বিশ্বে ৭০ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করছেন। পাঁচ বছর বয়সের গণ্ডি পেরোবার আগেই ফি বছর মৃত্যু হয় ৫০ লাখ শিশুর। যার অন্যতম কারণ অপুষ্টি, স্বাস্থ্যহানি, এমন রোগ যা চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো সম্ভব অথচ অর্থ এবং সচেতনতার অভাবে সেটা সম্ভব হয় না। আমরা সেসব মানুষের পাশে দাড়াতে চাই।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়