মহসীন কবির : একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গাইবান্ধার রঞ্জু মিয়াসহ পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় প্রসিকিউটর ছিলেন মোখলেসুর রহমান বাদল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবুল হাসান। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৪০তম রায়।
এর আগে প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন।
এ মামলায় মোট আসামি ছয়। তাদের মধ্যে রঞ্জু মিয়া গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছে। পলাতক আসামিরা হলো- রাজাকার কমান্ডার আবদুল জব্বার (৮৬), জাফিজার রহমান খোকা (৬৪), আবদুল ওয়াহেদ মন্ডল (৬২), মমতাজ আলী বেপারি মমতাজ (৬৮) ও আজগর হোসেন খান (৬৬)। এদের মধ্যে আজগর হোসেন খান মারা গেছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে হিন্দু সম্প্রদায়কে ধর্মান্তর ও দেশান্তরে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিরা গাইবান্ধা সদরের নান্দিদা ও ফুলবাড়ি গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা এবং সবাই জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। আসামিদের মধ্যে আবদুল জব্বার, জাফিজার রহমান খোকা ও আবদুল ওয়াহেদ মণ্ডল ’৭১ সালের আগে থেকেই জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিল। জব্বার ও খোকা মানবতাবিরোধী অপরাধে ১৯৭২ সালে গ্রেফতার হলেও তাদের কোন বিচার হয়নি। খোকার বর্তমান ঠিকানা রাজধানীর কাফরুল থানার উত্তর ইব্রাহিমপুর। ’৭৫ সালে পুলিশের চাকরিতে সযোগ দিয়ে ’১৪ সালে অবসরে যান। মমতাজ আলী বেপারি মমতাজ ১৯৭৪ সালে কৃষি বিভাগে চাকরিতে যোগ দিয়ে ’১২ সালে অবসর নেয় বলে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার অভিযোগে বলা হয়েছে।
অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, প্রথম অভিযোগ : ১৯৭১ এর জুন মাসের প্রথম দিকে আজগর হোসেন খানের নেতৃত্বে ৮-১০ জন রাজাকার এবং ১৫-২০ জন পাকিস্তান দখলকার সেনাবাহিনী গাইবান্ধার সদরে সাহাপাড়া ইউনিয়নের বিঞ্চপুর গ্রামে হিন্দুদের বাড়িতে হামলা করে। তারা অম্বিকা চরণ সরকার, দ্বিজেন চন্দ্র সরকার ও আব্দুল মজিদ প্রধানকে নির্যাতন করে। আসামিরা ফুল কুমারী রানী ও তার জা সাধনা রানী সরকার (বর্তমানে মৃত) আটক করে নির্যাতন করে। তারা মুসলমান হওয়ার প্রতিশ্রæতি দিলে কপালের সিঁদুর এবং হাতের শাখা ভেঙ্গে দিয়ে ছেড়ে দেয়।
আপনার মতামত লিখুন :