শিরোনাম
◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ০১:৫৮ রাত
আপডেট : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ০১:৫৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন ঘিরে পদ-পদবী পেতে নেতাদের দৌঁড়ঝাপ

সমীরণ রায়: ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর। একই সঙ্গে সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনেরও দিনক্ষণ নির্ধারণ করে দিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। পদ-পদবী পেতে হাইকমান্ডের কাছে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন নেতারা।

আগামী ৬ নভেম্বর কৃষক লীগ, ৯ নভেম্বর শ্রমিক লীগ, ১৬ নভেম্বর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ২৩ নভেম্বর আওয়ামী যুবলীগ ও ২৯ নভেম্বর আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ।
সূত্র জানায়, ক্যাসিনো ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও দুর্নীতি করে দল এবং সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে বনে গেছেন কোটিপতি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে দেশজুড়ে এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। ফলে অনেক নেতাই গা ঢাকা দিয়েছেন। সম্প্রতি ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগের একাধিক নেতা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। দেশের ভেতরে ও বাইরে পলাতকের সংখ্যাও কম নয়। শীর্ষ কয়েক নেতাও রয়েছেন আতঙ্কে।

একই অবস্থা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ ও মৎস্যজীবী লীগেরও। এ অবস্থায় ৫ সহযোগী সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের পর এসব নেতারা গাঢাকা দিলেও সরাসরি দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ না করে আকার ইঙ্গিতে পদ-পদবী পেতে তদবির চালাচ্ছেন। এমনকি দলে অনুপ্রবেশকারীদের কেউ কেউও টাকা দিয়ে পদ-পদবী কিনতে লবিংয়ে ব্যস্ত।

তবে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী নেতাদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অপরাধী যেই হোক কোনো ছাড় দেয়া হবে না। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার পর চলমান অভিযানে অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার ও রিমান্ড আতঙ্কে রয়েছেন। ফলে আসন্ন সম্মেলনে প্রার্থী হওয়া-না হওয়া নিয়ে দোলাচলে রয়েছেন অনেক ডাকসাইটের নেতারাও।

সূত্র জানায়, বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে সহযোগী সংগঠনগুলোর নতুন কমিটিতে। বাদ পড়বেন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী, দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজ ও চাঁদাবাজ নেতারা। নতুন নেতৃত্বের সন্ধান শুরু করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সার্বিক সহযোগিতা করছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। ফলে সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বে আসতে পারেন দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের কেউ কেউ।

এসব বুঝতে পেরে কিছুদিন আগেও যেসব নেতারা সংগঠনের নেতৃত্ব পেতে মুখিয়ে ছিলেন, তাদের অনেকেই আজ নীরব।তবে ভেতরে ভেতরে দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছেন তারা। প্রার্থিতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোহাই দিয়ে তারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ যদি মনে করেন, আমাদের নেতৃত্বে রাখবেন, তাহলে আছি, না দিলে নেই।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনে কোনো লবিং তদবির চলবে না। কোনো অনুপ্রবেশকারীকে সুযোগ দেয়া হবে না। অনুপ্রবেশকারীরা সংগঠনে ঢুকে পড়লে দলকে আরও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে। ফলে যারা সৎ, শিক্ষিত, দক্ষ, মেধাবী, পরিশ্রমী ও ত্যাগি তাদেরকে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। কারও বিরুদ্ধে যদি কোনো অনৈতিক অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, আওয়ামী লীগের ভতরে গ্রুপ ও দল ভারী করতে যারা বিএনপি-জামায়াতকে দলে ঢুকিয়েছেন, আর যারা ঢুকে পড়েছেন, তাদের খুঁজে বের করে ঝেঁটিয়ে বের করে দিতে হবে।

আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘সম্মেলনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীরা তো পদ-পদবী প্রত্যাশী হবেনই। তারা যার যার অবস্থান থেকে লবিং-তদবির করবেন, এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি আগামীতে সাধারণ সম্পাদক পদে থাকবো কি না, সেটি প্রধানমন্ত্রীর এক্তিয়ার। কারণ, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ দুটির সম্পূর্ণ মালিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বিষয়টিসহ সম্মেলন কিভাবে হবে তার পরামর্শ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।’
২০১২ সালের ১১ জুলাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ১৪ জুলাই যুবলীগ, ১৭ জুলাই শ্রমিক লীগ এবং ১৯ জুলাই কৃষক লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল। ৩ বছর মেয়াদী কমিটিগুলোর সম্মেলনের সময়সীমা ২০১৫ সালে শেষ হয়ে গেছে।

সম্পাদনা: অশোকেশ রায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়