দেবদুলাল মুন্না : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্র জুবায়ের আহমেদ মারা গিয়েছিলেন সাত বছর আগে ঠিক বুয়েটে সম্প্রতি হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া আবরারের মতোন। কিন্তু তার হত্যাকারীরা এখনও পলাতক। শুধু পলাতক নয় সাজাপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামি খান মোহাম্মদ রইস ওরফে সোহান কয়েক মাস আগে ফেসবুকে এরকম একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন:“আমি পাখির মত মুক্ত... এখন আমি উড়তে পারি...”। ফেসবুকে দেওয়া তথ্য বলছে দেশ থেকে পালিয়ে তিনি এখন মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। জুবায়ের হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত ইশতিয়াক মাবুব ওরফে অরূপ গত বছর ১৮ অক্টোবর ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেন। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, টেবিলে কফির কাপ নিয়ে চেয়ারে বসে রয়েছেন তিনি। ক্যাপশনে দেওয়া তথ্য বলছে, ছবিটি কুয়ালালামপুরের একটি স্টারবাকস স্টোরে তোলা। প্রায় দুই বছর হলো জুবায়ের হত্যার রায় দিয়েছে আদালত। অথচ এই দুজনসহ সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ জনই ধরাছোঁয়ার বাইরে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অপর তিন জন হলেন খন্দকার আশিকুল ইসলাম ওরফে আশিক, মাহবুব আকরাম এবং জাহিদ হাসান।২০১২ সালের জাবির ইংরেজি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়েরকে হত্যাকারীরা পিটিয়ে হত্যা করে। অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন বলে সেসময় শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিল। এই দুই অভিযুক্ত ছাড়া বাকি চার আসামি বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হলেও আশিক, আকরাম, অরূপ ও সোহান কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যান। তখন থেকে পলাতক রয়েছেন তারা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হত্যার বহু ঘটনার মধ্যে এটাই ছিলো প্রথম রায় যেখানে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলকভাবে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।এমনকি একজন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছিল।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ছাত্রাবাসেও পিটিয়ে হত্যা করা হয় আবিদুর রহমান নামে এক মেধাবী শিক্ষার্থীকে। চমেকের ৫১তম ব্যাচের ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) ৩য় বর্ষের এ ছাত্রকে ছাত্রদল কর্মী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তবে আলোচিত এ খুনের মামলার কোন আসামির সাজা হয়নি। ১২ আসামি ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বেকসুর খালাস পেয়ে গেছেন। বিগত ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর পিটুনির শিকার হয়ে দুইদিন পর ২১ অক্টোবর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবিদ। তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মধ্যম বড়ইতলী গ্রামের মৃত নুরুল কবির চৌধুরীর ছেলে। এ ঘটনায় আবিদের মামা নেয়ামত উল্লাহ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রসংসদের ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অশোক কুমার দাশ বলেন, সাক্ষীরা কোনো আসামি শনাক্ত করতে পারেননি। তারপরও রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সাক্ষ্য ও জেরায় আসামিদের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় সবাইকে খালাস দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :