জাকির তালুকদার : আবরার হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে স্লোগান উচ্চারিত হচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতেই পারে যে, এই স্লোগান অর্থহীন। কিন্তু ফেসবুকে যে পোস্টের কারণে আবরারকে মরতে হলো, তা ছিলো ভারতসম্পর্কিত। আরও স্পষ্টভাবে বলা যায়, ভারতের সঙ্গে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী যেসব চুক্তি করে এলেন সেসব চুক্তির বিরোধী কথা লেখা ছিলো সেই পোস্টে। তাই স্লোগানটি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের মানুষের ভারত বিরোধিতার প্রধান কারণ পানি।
প্রধানমন্ত্রী তিস্তার পানি আনতে পারেননি, উল্টো দিয়ে এসেছেন ফেনী নদীর পানি। তবু তিনি এবং তার সরকার দাবি করছেন যে, এ সফর খুব ফলপ্রসূ হয়েছে। কিন্তু আমরা জানতে পারছি যে, ভারত কয়েক বছর ধরেই ফেনী নদী থেকে পাম্পের সাহায্যে পানি সরিয়ে নিচ্ছে। ৩০টি পাম্প বসিয়ে পানি নিচ্ছে তারা। প্রতিটি পাম্প দুই কিউসেক শক্তির। ফলে শীতকালে যেখানে ফেনী নদীর প্রবাহ থাকার কথা আশি কিউসেক, তা কমে হয়েছে পঞ্চাশ কিউসেক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভারতকে যে ১.৮২ কিউসেক পানি দেবার চুক্তি করে এলেন প্রধানমন্ত্রী, তা কি এই ৩০টি পাম্পের অতিরিক্ত? পাম্পগুলো কি এখন বন্ধ হবে? নাকি পাম্পও চলবে, তার সঙ্গে ১.৮২ কিউসেক পানি অতিরিক্ত দেয়া হবে? এসব অস্পষ্টতাই হচ্ছে বাংলাদেশের সরকারগুলোর নতজানুতার রক্ষাকবচ। পাবলিককে জানালেন। কিন্তু পুরোটা নয়। এই ধরনের কাজ জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
বারবার বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়ে আমাদের দেশের মানুষ সরকার এবং শাসকদের প্রতি ভারত বিষয়ে আস্থাহীন হয়ে পড়েছে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে আবরারের লেখা ফেসবুক পোস্টে। তাকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। সমীকরণটা তাই দাঁড়িয়েছে: ‘আবরার হত্যা-ছাত্রলীগ-শেখ হাসিনার ভারত সফরের চুক্তিগুলো এবং ভারত।’ আমার বিশ্বাস ভারতের বিরুদ্ধে স্লোগান আসলে আমাদের নতজানুতার বিরুদ্ধে স্লোগান। অনেকেই বলছেন এসব ইস্যু নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে জামায়াত-শিবির। তাদের জিজ্ঞেস করিÑ সরকার এবং সরকারের পেটোয়া বাহিনী পানি ঘোলা করে কেন? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :