মাসুদ আলম ও মামুন খান: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত আরও তিন শিক্ষার্থীকে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন- শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির ও আকাশ হোসেন।বুধবার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওহিদুজ্জামান আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করেন। শুনানি শেষে ঢাকার হানগর হাকিম তোফাজ্জাল হোসেন এই আদেশ দেন।
এদিকে আবরার হত্যাকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে শাখাওয়াত ইকবাল অভি নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি দক্ষিণ বিভাগের (লালবাগ জোন) এডিসি খন্দকার আরাফাত লেনিন বলেন, আবরার হত্যা মামলায় ১৯ জনের মধ্যে অভির নাম নেই। তবে আবরারের সঙ্গেই বুয়েটে একই বিষয়ে একই ব্যাচে পড়ে অভি। হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের এডিসি ওবায়দুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে জিগাতলা এলাকা থেকে রাফাত এবং সন্ধ্যায় ডেমরা থেকে মনির ও গাজীপুরের বাইপাল থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ দক্ষিণ। এর আগে মঙ্গলবার আবরার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার অপর ১০ আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ডিবি পুলিশ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, আবরারকে পরিকল্পিতভাবেই নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের হলের ভেতরে ঢুকতে দেননি আসামিরা। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করার জন্য এই তিন আসামি রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। তিন আসামির মধ্যে দুজনের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তবে রাফাতের পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, তিনি ছাত্রলীগের কোনো নেতা নন। ঘটনার দিন রাত আটটার সময় তিনি ঢাকার একটি হলে সিনেমা দেখছিলেন।
অপর দুইজনের কাছে আদালত জানতে চান, তারা কোনো কিছু বলতে চান কি না? তখন আকাশ আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনিও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। আর মনির আদালতে কোনো কথা বলেননি।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আবরার হত্যায় ১৩ জনকে দুই দফায় ৫দিন করে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ গোয়েন্দা পুলিশ। এর মধ্যে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ জনকে গত মঙ্গলবার ও বুধবার আরো তিনজনকে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে। আবরারের ফেসবুক স্ট্যাটাস ও পূর্বশত্রুতাসহ একাধিক বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত চলছে।