দেবদুলাল মুন্না: আজ মহাত্মা গান্ধীর দেড়শতম জন্মবার্ষিকী । তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এর মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণের অবাধ্যতা ঘোষিত হয়েছিল। এ আন্দোলনের ফলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ।
গান্ধী ভারতে বাপু (বাবা) নামেও পরিচিত। ভারত সরকারিভাবে তার সম্মানার্থে তাকে ভারতের জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করেছে । ২০০৭ সালের ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করা। তার জন্ম ১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর ভারতের গুজরাটে। মারা যান ১৯৪৮ সালের ৩০শে জানুয়ারি।
মহাত্মা গান্ধীর বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি। যদিও 'দি ইয়ার্স দ্যাট চেঞ্জড দি ওয়ার্ল্ড’ নামের বইটিতে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ বলছেন,‘ গান্ধী মনে করতেন ‘যৌনতা হচ্ছে জান্তব কামনা’ মাত্র, যা বংশবৃদ্ধির জন্য দরকার।
আমেরিকান জন্মনিয়ন্ত্রণকর্মী যৌন শিক্ষাবিদ মার্গারেট স্যাঙ্গারের সাথে ১৯৩৫ সালে গান্ধীর যে কথোপকথন হয়েছিল এরই ভিত্তিতে মুলত বইটি লেখা। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী চাইতেন ‘শুধু আনন্দের জন্য যৌনমিলন করাকে নারীরা যেন প্রতিরোধ করে। মার্গারেট স্যাঙ্গারের সাথে গান্ধীর কথোপকথনের বিস্তারিত নোট নিয়েছিলেন গান্ধীর সচিব মহাদেব দেশাই।এ কথা বইয়ে উল্লেখ রয়েছে।
মহাত্মা গান্ধীর ‘ক্লিন ইমেজের’ জন্য তার ভক্তদের কাছে এই বইটি যথেষ্ঠ থাকলেও সমকামিতা অভিযোগে এনেছেন বৃটিশ ইতিহাসবিদ জাড অ্যাডামস।তার বইয়ের নাম, ‘গান্ধী: নেইকেড অ্যাম্বিশন’। ২০১০ সালে বইটি প্রকাশিত হলেও তখন জনপ্রিয়তা পায়নি। পেয়েছে গতবছর। ব্যাপক হইছই পড়ে যায়। গান্ধী সম্পর্কে অনেক স্পর্শকাতর তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
সমকামী ছিলেন মহাত্মা গান্ধী। গান্ধী নিয়মিত রুশ লেখক লেভ তলস্তয়কে চিঠি লিখতেন। হিটলারকে লেখা এক চিঠিতে গান্ধী ইহুদী নিধনকে প্রশংসা করেন। যদিও সেই চিঠি হিটলারের কাছে পৌছায়নি।কারণ বৃটিশ পুলিশ তার চিঠি সংগ্রহ করতো। ধুতি চাদর পরিহিত নিরামিষভোজী গান্ধী লন্ডনে পড়াশুনাকালীন আপাদমস্তক সাহেবি কায়দায় চলতেন।
গান্ধী সারাজীবনে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। বিদেশ যাবার কালে মা তাকে শপথ করিয়েছিলেন যে তিনি মদ, মাংস এবং নারী হতে বিরত থাকবেন। পরীক্ষা নিরীক্ষাবাদী গান্ধী বড় ভাইয়ের সাথে একবার ধূমপান করেন কিন্তু ভালো না লাগেনি। এক মুসলিম বন্ধু, শেখ মেহতাব তাকে বুঝিয়েছিলেন , ইংরেজরা মাংস খায় বলেই এত বুদ্ধি তাদের, এত দেশ শাসন করতে পারে। আর ভারতীয়রা নিরামিষাশী বলেই এখনো তাদের প্রজা হয়ে আছে।
গান্ধী সেই বন্ধুর কথায় প্রভাবিত হয়ে গরুর মাংস খান। সেই একবারই। গান্ধী আমেরিকা যাননি কখনো। তিনি মনে করতেন, তিনি যেহেতু জাতির পিতা (ভারতীয়রা গান্ধীকে বাপু বলে ডাকতেন) যে জাতির অধিকাংশ মানুষই গরিব, সেই গরিবের পিতা হয়ে তিনি কিভাবে বিমান ভ্রমণ করবেন?
আপনার মতামত লিখুন :