যুগান্তর : উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের হট্টগোল আর এমপিদের অভিযোগের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা।
বুধবার সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বিভিন্ন উপজেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে এ সময় উত্তেজনারও সৃষ্টি হয়।
বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বক্তব্যের মধ্যদিয়ে হট্টগোলের শুরু হয়। একইভাবে বিয়ানীবাজার, ওসমানীনগর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পরপরই সভাস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ হস্তক্ষেপ করলেও নেতাকর্মীদের দমানো সম্ভব হয়নি।
মোট কথা চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা শেষ হয়। বিশেষ করে বিয়ানীবাজার, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিশ্বনাথ নিয়ে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী কয়েস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পর আমরা দলের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে কেন্দ্রে রিপোর্ট পাঠিয়ে ছিলাম, আজও তার কোনো সুরাহা হয়নি। এ জন্য দলের আজ এই অবস্থা। শুধু দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে নয় মাঝে মধ্যে দলের শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন। ৯ বছরে ৬ কমিটি দিয়ে কীভাবে জেলা কমিটি চলবে। জেলা কমিটিকে অকার্যকর উল্লেখ করে দ্রুত সম্মেলনের জন্য তাগিদ প্রদান করেন তারা।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, অনেক সময় দেখা যায় কাউন্সিলে কেবল সভাপতি-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়। এ রকম হলে অনেক ধান্দাবাজি ঝামেলা হয়।
তিনি বলেন, এগুলোকে প্রশ্রয় দেয়া ঠিক নয়। তাই একসঙ্গেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা উচিত। অপূর্ণাঙ্গ কমিটি করে রাখা ঠিক না। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়েও যেন কমিটি গঠন করা হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
বর্তমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের প্রতি ইঙ্গিত করে বর্ষিয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতিও হয়। বঙ্গবন্ধুর সময় আমরা রফতানি করেছি ৩শ’ মিলিয়ন ডলার, বর্তমানে হচ্ছে ৪৬ বিলিয়ন আর ২০২১ সালে হবে ৬০ বিলিয়ন ডলার।’
স্মৃতিচারণ করে তোয়ায়েল আহমদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতাই ছিলেন না, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর মতো দয়ালু, এত হৃদয়বান নেতা বিরল।
তিনি বলেন, এক সময় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ আমরা বাজাতে পারতাম না। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
তোয়ায়েল আহমদ বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। এই মহান নেতার কর্মী হিসেবে আমরা যেন কলুষিত না হই, আমরা যেন কলঙ্কমুক্ত থাকি। সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ, আহমদ হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. মুসফিক হোসেন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক রফিকুর রহমান, শামীমা শাহরিয়ার এমপিসহ জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন :