শিরোনাম

প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১১:৩২ দুপুর
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১১:৩২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শুদ্ধি অভিযান সম্পর্কে কিছুই জানেন না আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা!

ওয়ালি উল্লাহ : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে আইনপ্রয়োগকারী ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে। তবে এসর্ম্পকে কিছুই জানেন না দলটির শীর্ষ নেতারা! কাদের বিরুদ্ধে অভিযান হচ্ছে, কারা অভিযুক্ত বা কাদের বিরুদ্ধে কি অভিযোগ পেয়েছে সেই সমস্ত তথ্য সম্পূর্ণ গোপন রাখা হচ্ছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার যারা এইসব ব্যাপারে তদন্ত করছেন তাদেরকে বলা হয়েছে, এইসব বিষয়ে কোন নেতাকে কোন তথ্য দেওয়া যাবে না। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই প্রতিবেদনগুলো দিচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ জার্নাল

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, গত শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের কার্যনির্বাহী বৈঠকে প্রথমবারের মতো দলের অভ্যন্তরের দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারে মুখ খোলেন। ঐ দিনই ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেখানে তিনি যুবলীগের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া অভিযোগ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দর কাছে তুলে ধরেন। তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বা আদৌ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা সে ব্যাপারে তিনি কিছুই বলেননি।

একাধিক আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, আওয়ামী লীগে যে শুদ্ধি অভিযান করা হচ্ছে সেটা একান্ত দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নিজস্ব এখতিয়ারে করা হচ্ছে। শুদ্ধি অভিযানের প্রক্রিয়া কি হবে, কারা অভিযুক্ত সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রাখা হচ্ছে এবং আমরা এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানি না।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, বিভিন্ন সময়ে দলের ভিতর যারা অন্যদল থেকে অনুপ্রবেশ করেছেন। দলে ঢুকে যারা বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি প্রকাশ্যে উষ্মাও প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা কেউ কারো কাছে ম্যানেজ হয়ে যায়। প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তারা পাড় পেয়ে যাচ্ছেন।

দুই বছর আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের অভ্যন্তরে যারা অনুপ্রবেশকারী, যারা দলের ভিতর ঢুকে বিভিন্ন বদনাম করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এই তা প্রতিফলিত হয়নি।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, যে সমস্ত অনুপ্রবেশকারী এবং দলের ভিতর থেকে যারা দলের বদনাম করছে। বিভিন্ন অপকর্ম টেন্ডারবাজি এবং চাঁদাবাজি করছে, তারা সব সময় দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রক্ষা করছে। যার ফলে দেখা যাচ্ছে যখনই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উঠছে তখনই সিনিয়র নেতারা বাধা দিচ্ছেন। সিনিয়র নেতা (অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ) যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো অস্বীকার করছে, বলছে এটা প্রতিপক্ষদের কুৎসা রটনা। বারবার এই অস্বীকারের সংস্কৃতি থেকে এবার আওয়ামী লীগ বেড়িয়ে আসতে চায়। এ কারণেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কাউকে কোন দায়িত্ব না দিয়ে নিজেই এই বিষয়টি তদারকি করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মুজিব বর্ষের আগে আওয়ামী লীগের একটি ক্লিন ইমেজ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্যই আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজস্ব উদ্যোগে দলের শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন।

বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, যারা আওয়ামী লীগ এবং এর বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে টেন্ডারবাজি ব্যবসা, মাদক ব্যবসা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তারা হয় বিএনপি বা জামাত বা অন্য দল থেকে এসে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করে দলের বদনাম করছে। সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলছে।

এ কারণেই শেখ হাসিনা এদের বিরুদ্ধে ‘একক’ যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। কোন সিনিয়র নেতাকে এটার সঙ্গে যুক্ত না করার অন্যতম প্রধান কারণ হলো তাদেরকে যেন অপরাধী বা অপরাধে অভিযুক্তরা ম্যানেজ করে না ফেলতে পারে। এ কারণেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এ ব্যাপারে অন্ধকারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়