জান্নাতুল পান্না : রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পেতে সহযোগিতা কারীদের মধ্যে ভেরিফিকেশনে পুলিশের গাফিলতি ও আর্থিক লাভবান হওয়ার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পুলিশের এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিগগিরই অভিযান শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদক কর্তৃপক্ষ। এর আগে দুদকের সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর তৈরি একটি এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার দুদক মহাপরিচালকের (প্রশাসন) কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।
দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গারা কীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করছে, কোন প্রক্রিয়ায় তারা পাসপোর্ট তৈরি করছে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালিয়ে আমরা একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছি। অভিযানে পাসপোর্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনে পুলিশের আর্থিক লাভের আশায় রোহিঙ্গাদের ছাড় দেওয়ার তথ্য পেয়েছি। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যেসব পুলিশ সদস্য জড়িত, আমরা তাদের আইনের আওতায় আনতে চাই। এজন্য আমরা দুদক মহাপরিচালকের (প্রশাসন) কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। শিগগিরই ওইসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করবো।
সম্প্রতি পাসপোর্ট নিয়ে কয়েকজন রোহিঙ্গা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। গত ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী তিন রোহিঙ্গা তরুণকে চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানার একে খান এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা দালালের মাধ্যমে নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট তৈরি করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করে। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর পাসপোর্টসহ ধরা পড়েন নজির আহমদ নামে এক রোহিঙ্গা। সৌদি আরব যাওয়ার সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এরও আগে পাসপোর্ট করতে গিয়ে নজিরের স্ত্রী রমজান বিবি আটক হন। লাকি আক্তার নাম দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন ওই নারী।
এসব ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে আসার পর নগরীর মনসুরাবাদ বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে দুদফায় এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায় দুদক টিম। এসময় নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসেও অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তারা রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ পায়। এর পরই এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক টিম।
দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযানে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট ও এনআইডি পাওয়ার ক্ষেত্রে পৌরসভার মেয়র, চেয়ারম্যান, মেম্বার, সচিবসহ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলেও জানান দুদকের এই কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :