সওগাত আলী সাগর, ফেসবুক থেকে, তখন প্রভিন্সিয়াল ইলেকশনের প্রচারণা তুঙ্গে। দারহাম এলাকায় ভোট চাইতে যাচ্ছেন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী ডাগ ফোর্ড। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার কোনো কর্মসূচি তার ছিলো না, ইন্টারভিউতো নাই ই। কিন্তু রাস্তায় তাকে ধরে বসলো উশরা নামের এক তরুণী। ডাগ ফোর্ডের ইন্টারভিউ চান তিনি। ডাগফোর্ড যেনো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলেন এই আবদার। রজার্স টিভির তরুণ এই রিপোর্টারের জেদ যেনো বেড়ে যায়। তিনিও নাছোর বান্দা। ইন্টারভিউ তিনি করবেনই। শেষ পর্যন্ত হার মানলেন ডাগ ফোর্ড। রাস্তায় ক্যাম্পেইন বাস থামিয়ে ইন্টারভিউ দিতে রাজি হলেন তিনি।
ডাগ ফোর্ড এখন অন্টারিওর প্রিমিয়ার। আগামী অক্টোবরে অন্টারিও পার্লামেন্টের অধিবেশন যখন বসবে তখন ডাগ ফোর্ডের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ সরকার উশরা নামের মেয়েটির জন্য সংসদে দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করবে। পুরো সংসদ শোক জানাবে এই মেয়েটির জন্য। গত কয়েক দিন ধরে অবশ্য অন্টারিওর শীর্ষ রাজনীতিকরা টুইট করে মেয়েটির জন্য শোক প্রকাশ করছেন, তার সঙ্গে নিজেদের স্মৃতির কথা জানাচ্ছেন। উশরা জাভেদ এখন সবার কাছেই স্মৃতি হয়ে গেছেন।
রায়ার্সন ইউনিভার্সিটির জার্নালিজমের ছাত্রী উশরার স্বপ্ন ছিলো খ্যাতিমান সাংবাদিক হ্ওয়া। অন্টারিও পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা এন্ড্রিয়া হারওয়াথের সাথে সেই স্বপ্ন ভাগাভাগিও করেছিলো উশরা। সেই স্বপ্নকে স্বপ্ন রেখেই হারিয়ে গেছে উশরা- বাংলাদেশি কমিউনিটির নতুন প্রজন্মের সন্তানদের জন্য যে হতে পারতো আরেকটি ইতিহাস, প্রেরণার আরেকটি উৎস। বিরল এক রোগ যা হৃদপিন্ডকে আক্রমণ করে- উশরাকে কেড়ে নিয়েছে অকালে। একুশ বছর বয়সে উশরা হয়ে গেছে হারিয়ে য্ওায়া একটি তারকার নাম। যাকে নিয়ে কুইন্সপার্কের প্রেস গ্যালারিতে, সাংবাদিক মহলে, অন্টারিওর শীর্ষ রাজনীতির অঙ্গনে রীতিমতো মাতম হচ্ছে- আমরা ভালোভাবে জানতেই পারিনি- বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একটি তারকা কানাডার অকাশে কি প্রবলভাবে জ্বলে উঠছে।
জানি, উশরার বাবা- মায়ের, স্বজনদের এই শোক সহ্য করা দুরুহ। তবু আমরা সেই বেদনার অংশীদার হতে চাই। কানাডায় বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য ইতিহাস হতে পারতো যে মেয়েটি, ইতিহাস হয়ে উঠছিলো যে মেয়েটি, সেই উশরার জন্য, উশরা জাভেদের জন্য আমরাও বেদনায় মৃহ্যমান। তার আত্মার শান্তি কামনা করা ছাড়া আমাদের আর কি ই বা করার আছে ! মৃত্যুর কাছে আমরা কতোই না অসহায়!
আপনার মতামত লিখুন :