সওগাত আলী সাগর : ঢাকায় র্যাবের ‘ক্যাসিনো অভিযান’ নিয়ে উচ্ছসিত হওয়ার কোনো কারণ দেখি না। আচ্ছা, বাংলাদেশে কি ক্যাসিনো বেআইনি? এটিকে কি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়? সাংবাদিকদের কেউই সম্ভবত এই তথ্যটি তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেননি। সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছেন বলেও চোখে পড়েনি। নানা জনের উচ্ছাস দেখে মনে হচ্ছে- বাংলাদেশের জন্য এই জুয়াটাই একটা বড় সমস্যা ছিলো এবং দেশ এখন সমস্যা থেকে উত্তরণের সুযোগ পাচ্ছে। আসলেও কি তাই!
সিঙ্গাপুর, লাসভেগাস, ইউরোপ হতে চ্ওায়া বাংলাদেশে ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান এবং কিছু লোকের গ্রেফতার হ্ওয়ার মধ্যে অনেক মানুষই স্বস্তি খুঁজছে- তার কারণ, তারা সারা দেশে চেপে বসা দুর্নীতিতে ত্যক্ত-বিরক্ত। বিচারহীনতার প্রবণতা তাদের মধ্যে যে হতাশা তৈরি করেছে- এই অভিযান তার থেকে খানিকটা ভিন্নতর বলেও তাদের মধ্যে উচ্ছাস তৈরি হয়েছে। যুবলীগ নেতা খালেদ অস্ত্র নিয়ে ঘুরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার পর- পুলিশের কোনো পদক্ষেপ না দেখে মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছিলো, বাড়ছিলো আতঙ্ককও । এই অভিযান- সেই হতাশাকে খানিকটা হলেও ধীর গতি দেবে। তবে, আমি ক্যাসিনো ‘আবিষ্কার’কে বড় করে দেখার বিপক্ষে। এটি বাংলাদেশে আইনত নিষিদ্ধ হলেও। যদিও এটি নিষিদ্ধ কিনা- সে ব্যাপারে সুষ্পষ্ট কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই। পশ্চিমের দেশগুলোতে কিন্তু সরকারি ব্যবস্থাপনায়ই জুয়ার ব্যবস্থা আছে। কানাডা আমেরিকায় ফি সপ্তাহে মানুষ লটো, ম্যাক্স নানা ধরনের যে টিকেট কিনে- সেগুলো কিন্তু জুয়াই। এসব দেশে ক্যাসিনোতো আছেই। ঢাকায় কিংবা অন্যান্য শহরে ক্যাসিনো থাকাকে আমি দোষের মনে করি না। ক্যাসিনো যদি দেশের আইনের নিয়ন্ত্রণে না থাকে- সেটি অন্যায়। সে দায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও ।
এগুলো যদি অনুমোদনহীন হয়ে থাকে- তা হলে ক্যাসিনোগুলোর পাশাপাশি- সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিতে বলবো। প্রশাসনের নানা স্তরে এর চেয়ে অনেক বড় জুয়া হচ্ছে, শেয়ারবাজার, ব্যাংকিং খাতকে এর চেয়ে অনেক অনেক বড় ‘ক্যাসিনো বানিয়ে ফেলা হয়েছে গত কয়েক বছরে। দখল লুটপাটের ঘটনা কম নয়। সে দিকেও নিশ্চয়ই সরকারের দৃষ্টি পড়বে
আপনার মতামত লিখুন :