স্বপন দেব : কুলাউড়া উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালে কেউ প্রথম গেলে চোখ ছানাবড়া হবারই কথা। এটা হাসপাতাল না শিশু হাসপাতাল বুঝার উপায় নেই। মহিলা কিংবা পুরুষ ওয়ার্ড সবক’টি বেডে শিশু নিয়ে শুয়ে আছেন মায়েরা। পাশে বাবা কিংবা পরিবারের অন্য লোকজনকে পায়চারি করতে দেখা যায়। নিউমোনিয়া রোগি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এদিকে ভর্তিকৃত শিশুদের কারণে প্রায় আড়াই মাস থেকে সড়ক দ‚র্ঘটনা কিংবা মারমারি করে হাসপাতালে আসা রোগিদের বাধ্য মৌলভীবাজর সদর কিংবা সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করতে হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, আবহাওয়া অতিরিক্ত গরম হওয়ায় গরমে সৃষ্ট ঘাম থেকে ঠান্ডা লেগে শিশুর নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি এই জাতের রোগ বেশি দেখা দিয়েছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে শিশুদের রক্ষা করা সম্ভব। ১৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া হাসপাতালে গেলে সবক’টি বেডে শিশু রোগি ভর্তি দেখা যায়। কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, ভর্তিকৃত প্রায় সবরোগিই শিশু। এরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে গত জুলাই মাসে কুলাউড়া হাসপাতালে শুন্য থেকে ২৪ মাস বয়সী নিউমোনিয়া আক্রান্ত ১২০১ জন শিশু চিকিৎসা গ্রহণ করে। এরমধ্যে ৫৭৩ জন ছেলে এবং ৬২৮ জন মেয়ে শিশু। আগস্ট মাসে চিকিৎসা নেয় ছেলে ৬২১ জন এবং মেয়ে ৫৩৫ জন। এরমধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩৩ জন শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তবে নিউমোনিয়ায় কোন শিশু মৃত্যুর রেকর্ড হাসপাতালে নেই।
১৬ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের গৌড়করণ গ্রামের জাহেদ আলীর স্ত্রী নিউমোনিয়া আক্রান্ত ২ শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন কুলাউড়া হাসপাতালে। হাসপাতালে সিট নাই দেখে ঔষুধপত্র কিনে দুই শিশুর কেনোলা লাগিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন। তিনি জানান, ঔষুধ কিনলাম। কিন্তু হাসপাতাল থেকে কেনোলা লাগিয়ে দিতে একশ টাকা দাবি করেন। দুটি শিশুকে কেনোলা লাগানোর জন্য ২শত টাকা দিতে হয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক জানান, মুলত আবহাওয়া জনিত কারণে বেশি হচ্ছে। আর যেসব বাচ্চা পুরো কোর্স টিকা সময়মতো গ্রহণ করে না, তারাই আক্রান্ত হয়। নিউমোনিয়া ছাড়াও ব্রংকিউলাইটিস ভাইরালজনিত রোগও আছে। আমরা নিউমোনিয়া হিসেবে চিকিৎসা দিয়ে থাকি।
আপনার মতামত লিখুন :