শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:২০ দুপুর
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:২০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে দুই দেশের রেলপথ যাতায়াত সমস্যা সমাধান হবে, রেলওয়ে উপপরিচালক কালিকান্ত

শাহীন খন্দকার : ঢাকা-কোলকাতা, খুলনা-কলকাতা ট্রেন রুটে বাড়ছে যাত্রীর চাপ। এ প্রেক্ষাপটে ঢাকা কলকাতা রুটে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন সপ্তাহে ৬ দিন এবং খুলনা কলকাতা রুটে চলাচলকারী বন্ধন এক্সপ্রেস সপ্তাহে দু’দিন চলাচল করবে এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

রেল সূত্রে জানা যায়, আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের উপপরিচালক (মার্কেটিং) কালিকান্ত ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করে সপ্তাহে চার দিন। আর খুলনা-কলকাতা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে সপ্তাহে একদিন।

উপ-পরিচালক কালিকান্ত ঘোষ বলেন, গত ৬ আগষ্ট রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সূজন ভারতীয় রেলমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ভারত সফর করেন।

এসময় রেলপথমন্ত্রী বন্ধন ও মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে ৬ দিন চলাচলের বিষয়ে আলোচনা করেন। ভারতের রেলপথমন্ত্রী বন্ধন এক্সপ্রেস সপ্তাহে ২দিন এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন সপ্তাহে ৬ দিন চলাচলের ব্যাপারে তার মতামত দিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রীর ভারতে সফরকালে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা-কলকাতা ও খুলনা-কলকাতা ট্রেন রুটে যাত্রীদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। এসব ট্রেনের টিকিট পেতে যাত্রীদের এক মাস আগে থেকে লাইন ধরতে হয়। প্রতিটি ট্রেনে আসনসংখ্যা তিন ক্যাটাগরিতে মোট ৪৫৬টি। প্রথম দিকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন সপ্তাহে দুই দিন চলাচল করত। মৈত্রী এক্সপ্রেসের জনপ্রিয়তা আর যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর থেকে প্রতি সপ্তাহে চার দিন চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারপও যাত্রীর চাপ কমেনি, বরং বেড়েছে। অপরদিকে খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রীর ব্যাপক চাহিদার কারণে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর চালু হয় বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন। বন্ধন এক্সপ্রেস সপ্তাহের বৃহস্পতিবার চলাচল করে। খুলনা থেকে কলকাতা পর্যন্ত ১৭৫ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিতে সময় লাগে মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টা। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে কলকাতার চিতপুর থেকে যাত্রী নিয়ে খুলনায় পৌঁছে দুপুর ১২টার দিকে। আর দুপুর দেড়টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে যায়। বন্ধন ট্রেনে ১০টি কোচ রয়েছে। যার মধ্যে চারটি এক্সিকিউটিভ চেয়ার, চারটি এসি চেয়ার গাড়ি (সিসি) এবং দুইটি জেনারেটরসহ লাগেজ ও গার্ডভ্যান।

খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেসও ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের মতোই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কেননা দুদেশের মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ চলাচল করে বেনাপোল-হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে। প্রায় প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি বেনাপোল-হরিদাসপুর হয়ে ভারত যান।

অপরদিকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশন থেকে। ঢাকা থেকে সপ্তাহে চার দিন শুক্র, শনি, রবি ও বুধবার, আর কলকাতা থেকে শুক্র, শনি, সোম ও মঙ্গলবার। রেলসূত্র জানায়, মৈত্রী এক্সপ্রেস শুরুর বছর যাত্রী ছিল ১৬ হাজার। বর্তমানে সে সংখ্যা বেড়ে এক কোটি স্পর্শ করেছে। এখন প্রতি মৈত্রী এক্সপ্রেস থেকে বাংলাদেশ বছরে দুই কোটি টাকা আয় করে। এ আয়ে উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা-কলকাতার দূরত্ব ৩৯২ কিলোমিটার। ভাড়া আদায়যোগ্য দূরত্ব ৫৩৮ কিলোমিটার। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট-দর্শনার দূরত্ব ২৭২ কিলোমিটার। দর্শনা-কলকাতা দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুরো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও ভাড়া বাড়ানো হয়নি। বরং আগের তুলনা সুযোগ-সুবিধাও বেশি। এসি কেবিন সিট ১ হাজার ৮৮৬, এসি চেয়ার ১ হাজার ৪৩৩ টাকা। আর নন-এসি টিকিটের মূল্য ৬৫০টাকা। আর ভারতে ভ্রমণ কর ৫০০ টাকাও টিকিট সংগ্রহের সময় নিয়ে নেওয়া হয়।

২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ) ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু হয়। তবে প্রথম দিকে যাত্রীর অভাবে প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল ট্রেনগুলো। রেলসূত্র জানিয়েছে, ক্রমাগত লোকসান গুনতে থাকায় বাংলাদেশ-ভারত দুই পক্ষরেই মৈত্রী নিয়ে উৎসাহে কিছুটা ভাটা পড়ে। তবে চলাচলের প্রায় তিন বছরের মাথায় ব্যাপক হারে যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মৈত্রী ট্রেনে থাকছে ১০টি কোচ। এর মধ্যে চারটি এসি প্রথম শ্রেণি, চারটি এসি প্রথম শ্রেণির চেয়ার কোচ এবং দুইটি এসি পাওয়ার কার থাকবে। এখন থেকে ১০টি কোচে ৪৫৬ জন যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। এর আগে সাত বগি নিয়ে ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করত। বাংলাদেশ রেলের এসি বা নন এসি মিলিয়ে যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল ৪১৮ জন। আর ভারতীয় রেলের রেক কিছুটা বড় বলে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৪৫৯ জন।

উল্লেখ্য, আকাশ বা স্থলপথের মতো মৈত্রী এক্সপ্রেসের সিংহভাগ যাত্রী বাংলাদেশের নাগরিক। শিক্ষা, চিকিৎসা, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ্ ছাড়াও বহুজনই ভ্রমণের জন্য বেছে নেন কম খরচের হাতের কাছের কলকাতাকেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়