তাপসী রাবেয়া : বাংলাদেশ সরকার ‘পালেরমো প্রোটোকল’ অনুসমর্থনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় শিগগিরই মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক। রোববার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আইনগতভাবে কার্যকর যোগ্য এই প্রটোকলের অনুসমর্থনের নথি জাতিসংঘে পাঠানো হয়েছে।
মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে সরকারের উপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ দেওয়ার পটভূমিতে পররাষ্ট্র সচিবের এ মন্তব্য এলো। মানবপাচার বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগের বিষয়ে কর্মশালার উদ্বোধনের সময় শহিদুল বলেন, দেখবেন হঠাৎ করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে কর্মশালায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের রাজনৈতিক কাউন্সিলর ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য বলপূর্বক শ্রম, সেবা ও যৌনকর্মে বাধ্য করা এবং অভিবাসী পাচার বৈশ্বিক প্রপঞ্চ। এগুলি বাংলাদেশের জন্যও ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার পাচারের তথ্য গোপন করায় এবিষয়ে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। মানববাচার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৩ সালে ৭ হাজার ৭০০ জনের পাচারের তথ্য নথিভুক্ত হয়েছিল। এসব ঘটনায় ৭ হাজার ৭৭৮টি মামলা হয় এবং ৫ হাজার ৫৪৬ পাচারকারীকে উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৫২ জন নারী ও ৯১ শিশু। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ক্রিস্টেনসেন বলেন, অনেক সময় সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র বিদেশে কর্মরত প্রবাসীদের টার্গেট করে।
অনেক পাচারকারী দেশের অভ্যন্তরীণ সীমানার মধ্যে দুর্বলদের শোষণ করে। সচিব বলেন, কর্মসংস্থানের অভাব এবং অভিবাসনের উচ্চ ব্যয়ের ধাক্কা থেকে অনিয়মিত স্থানান্তর হয়; তারা পাচারের শিকারও হয়। বলেন, পাচারকারীরা খুব চৌকস এবং তারা এ ব্যবসায় তৃতীয় বা চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি ব্যবহার করে।“পালেরমো প্রোটোকল অনুসমর্থন বাংলাদেশের মানবপাচারকে মোকাবেলায় ‘বড়’ পদক্ষেপ’। ২০০৩ সালে ২৫ ডিসেম্বর আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘবদ্ধ অপরাধ বিষয়ে জাতিসংঘ কনভেনশন কার্যকর করা হয়। এই কনভেনশনের তিনটি সম্পূরক অংশের মধ্যে একটি হলো পালেরমো প্রোটোকল।
আপনার মতামত লিখুন :