শিরোনাম
◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:৫৭ দুপুর
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:৫৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ন্যায়বিচার বন্ধ হয়ে গেলে বসে জনতার আদালত, বললেন সোহেল

শাহানুজ্জামান টিটু ও শিমুল মাহমুদ: ‘এ আদালতে কোনো এজলাস নেই, লাল টেলিফোন নেই, খাসকামরা নেই। এ আদালত বসে দেশের মাঠে, ঘাটে, বটতলায়, গ্রামে-গঞ্জে। এই আদালত শুধু ন্যায়বিচারের রায়ই দেয় না, অপরাধীদের কঠিন শাস্তিও দেয়। আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি হবে না। কঠিন থেকে কঠিনতর আন্দোলন করতে হবে।’ প্রয়োজনে সরকারের পতন ঘটিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার কথা বললেন বিএপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল।

চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান হাবিব উন-নবী খান সোহেল।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল আয়োজিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

শোভন-রব্বানী প্রসঙ্গে সোহেল বলেন, ‘শুধুমাত্র তাদেরকে পদচ্যুত করলেই হবে না। তারা অপরাধী, তাদের বিচার করতে হবে। আজকের এই মানববন্ধন থেকে বলতে চাই, যারা সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে ছাত্র রাজনীতিকে কলঙ্কিত করেছেন, ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন, তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা উচিত। তাদের বিচার হবে না, এমনটি হতে পারে না।’

‘তাদের (শোভন-রব্বানী) তো বয়স বেশি না। তাদের তো গডফাদার আছেন, বড় ভাই আছেন। যারা তাদেরকে চাঁদাবাজি শিখিয়েছেন। শুধুমাত্র এই দু’জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হবে না, যারা তাদেরকে চাঁদাবাজি শিখিয়েছেন, তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে সোহেল বলেন, ‘আমি জানি, হয়তো ওবায়দুল কাদের কালকেই বলবেন, ৮৬ কোটি টাকা কি কোনো টাকা হলো? তিনি বলবেনইবা না কেন, যে দেশে পর্দার দাম ৭০ হাজার টাকা আর বালিশের দাম পড়ে ৭ হাজার টাকা সেই দেশে কাদেরদের জন্য ৮৬ কোটি টাকা তো কোনো টাকাই না!’

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘দুর্ভাগা’ উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এই সভাপতি বলেন, ‘আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে দুর্ভাগ্যবান বলছি, এই কারণে যে, দেশে এখন নিম্ন আদালতে বিচার পাওয়া যায় না, উচ্চ আদালতে বিচার পাওয়া যায় অনেক ক্ষেত্রে। কিন্তু আমাদের নেত্রী দুর্ভাগ্যবান এই কারণে যে, তিনি নিম্ন আদালতের বিচার তো পেলেনই না, উচ্চ আদালতের বিচার থেকেও বারবার বঞ্চিত হচ্ছেন।’

‘আমাদের নেত্রী ন্যায়বিচার চেয়ে যখন আদালতে আবেদন করেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি  বিচারকদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, তারা যেন আমাদের নেত্রীকে ন্যায়বিচার দেয়ার মধ্যে নিজেদেরকে তখন এসকে সিনহার  পরিণতির কথা ভাবেন। তাদেরকে (বিচারকদের) বলবো- বাঘ হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আমরা প্রত্যাশা করি, ন্যায়বিচার দিতে আপনারা ‘বাঘের মতো’ হবেন। বাঘ হতে না পারলেও বাঘের লেজ তো হবেন। আমাদের নেত্রী বিচার চান, আর কিছুসংখ্যক বিচারক শুনানি শেষ করে দশ মিনিটের ব্রেক দেন। এটা আবার কীসের ব্রেক? ১০ মিনিটের ব্রেক মানে লাল টেলিফোনের ব্রেক।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, সাজা হওয়ার পরেও নাজমুল হুদা, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ আরও অসংখ্য নেতা জামিনে মুক্ত হয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ কোর্টের ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে আমাদের নেত্রীকে সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি জামিন পান না। এর নাম কি ন্যায়বিচার?’

বিচারকদের উদ্দেশ্যে সোহেল বলেন, ‘আমরা কী বলব আপনাদেরকে? ইহকালে যদিও পার পেয়ে যাবেন, কিন্তু পরকালে যে আদালত বসবে, সেখানে কিন্তু আপনারা বিচারকের চেয়ারে বসবেন না। আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন। আমাদের নিরাপরাধ নেত্রী জামিন পাবেন না, অথচ হুদা, মায়ারা মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুরে বেড়াবেন, এটা আমরা মানতে পারি না।’

হাবিব-উন নবী সোহেল বলেন, ‘তাহলে কি খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন না? আমরা বিশ্বাস করি, অবশ্যই তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। যখন দেশের প্রচলিত আদালতগুলোতে ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়, দেশের সাধারণ মানুষ যখন আদালত থেকে প্রচলিত আইনে বিচার পায় না, তখন সবার মুক্তির লক্ষ্যে আর একটি আদালত তৈরি হয়ে যায়। সেই আদালতের নাম জনতার আদালত। সেই আদালতে জানালা নেই, খাসকামরা নেই, লাল টেলিফোনও নেই। জনতার সেই আদালত ইতোমধ্যে বসেছে। সেই আদালতে খালেদা জিয়া নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করুন। অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দিন। জনতার আদালতে যখন জনগণ তাদের রায় বাস্তবায়ন করতে যাবে, পৃথিবীর এমন কোনো শক্তি নেই, তখন আপনার বিচার ঠেকিয়ে রাখতে পারে।’

মৎস্যজীবী দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মৎস্যজীবী দলের ভাই এবং বোনেরা নিজেদেরকে সংগঠিত করুন, শক্তিশালী করুন। নিশ্চয় আপনারা বুঝে গেছেন আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না। সেক্ষেত্রে কঠিন থেকে কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে প্রয়োজনে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করে আনতে হবে।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা.এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ষড়যন্ত্র করে আমাদের নেত্রীকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়া হেঁটে আদালতে গেলেও আজ হুইল চেয়ার ছাড়া অন্যের সহায়তা ছাড়া নিজস্ব কোনো কাজই করতে পারছেন না।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাহাতাবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহীম প্রমুখ বক্তব্য দেন। সম্পাদনা: অশোকেশ রায়

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়