নূর মাজিদ : শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, সুনামি, ব্যাপক বিধ্বংসী দাবানল, প্রবল ঝড়োবৃষ্টি এবং দীর্ঘস্থায়ী খরা এসব দুর্যোগ এখন ঘন ঘন বিশ্বজুড়ে আঘাত হানছে। প্রতিবছর এসব দুর্যোগের শক্তি এবং তীব্রতাও বাড়ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটাচ্ছে। এতো শুধু পৃথিবীর পরিবেশের জন্যে নয় বরং সারা বিশ্বের আর্থিকখাতের ব্যবসা এবং বিনিয়োগকেও নতুন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। মূল কারণও এখন আর অজানা নয়। বিজ্ঞানীরা এসব ঘটনাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ কয়েক দশকের আগ্রাসী বাণিজ্যিক নীতি পরিবর্তন করে, এখন বিনিয়োগে সতর্ক হওয়ার কথা ভাবছে বিশ্বের আর্থিকখাতের বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষত ব্যাংকিং এবং বীমা ব্যবসায়ীরা তাদের প্রচলিত খাতের বিনিয়োগ নীতি সংস্কারের ব্যাপারে এখন যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। খবর : গ্লোবাল ফাইন্যান্স।
মিউনিখ রিইনস্যুরেন্স কো¤পানির হিসেব অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই ২০১৭ সালে বিশ্বের বীমাখাতে মোট ১৪ হাজার ৭শ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। ইনস্যুরেন্স গ্রাহকদের এই পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ বাবদ দিয়েছে নানা বীমা প্রতিষ্ঠান। এই ক্ষতি পরিবেশ দূষণ কমাতে সক্ষম এমন নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগের গুরুত্ব বাড়িয়েছে। কিন্তু, সহসাই এমন পদক্ষেপ নেয়া সহজ নয়। বিনিয়োগ ব্যাংক এবং বীমা কো¤পানিগুলোর প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন, পরিবহন এবং খুচরা ব্যবসায়ে বিপুল বিনিয়োগ আছে। যা রাতারাতি অন্য উৎসে প্রবাহিত করা সম্ভব নয়। তাই আগামী দিনে বিনিয়োগ করার আগেই সতর্ক থাকাটাই ভালো, আর্থিক খাতের ব্যবসায়ে এমন উপলদ্ধি বাড়ছে।
ব্যাংক অব আমেরিকা মেরিল লিঞ্চের লন্ডন শাখার বিশেষজ্ঞ অ্যালস্টেয়ার রায়ান বলেন, ভবিষ্যতে কোন ধরনের শিল্পে বিনিয়োগ করা উচিৎ, সেটা ব্যাংকগুলো এখন নিজেদের মাঝেই আলোচনা করছে। তারা এটাও খতিয়ে দেখছে কোন ধরনের শিল্পের পরিবেশ দূষণের মাত্রা কম। সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচেতনতা এখন ব্যাংকগুলোর মাঝে এই প্রবণতা তৈরি করেছে। কারণ, পরিবেশ নিয়ে এখন ভোক্তারাও উদ্বিগ্ন। যে সব শিল্প জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী তাদের এখন বিশ্ববাসী নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা শুরু করেছেন।
সম্পাদনা : ইমরূল শাহেদ।
আপনার মতামত লিখুন :