শিরোনাম
◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০২:৩৬ রাত
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০২:৩৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এরশাদ প্রাসাদ বিলাসী প্রেসিডেন্ট ছিলেন না, বললেন সালমা ইসলাম

আসাদুজ্জামান সম্রাট : জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রাসাদ বিলাসী প্রেসিডেন্ট ছিলেন না। তিনি ছিলেন গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষের প্রেসিডেন্ট।তিনি তার জীবদ্দশায় শুধু চেয়েছিলেন বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকতে। তিনি সেই রাষ্ট্রনায়ক যিনি ক্ষমতায় থাকার সময় রাজধানী ছেড়ে প্রায় প্রতিদিনই গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আজ আমরা দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে এক ক্ষণজন্মা মহান নেতাকে স্মরণ করছি। তাকে হারানোর শোকে আমরা কাতর। রোববার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রয়াত সাবেক রাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ওপর আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম আরো বলেন, দেশ ও জনগণের প্রতি রাষ্ট্রনায়ক এরশাদের গভীর ভালোবাসা সম্পর্কে কলকাতার বনেদী সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকা ১৯৮৯ সালের ২৩ আগস্টের এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছিল, আমি পড়ছি, একটি মানুষকে ঘিরে সারা পল্লী বাংলার এমন আশা আকাক্সক্ষা, যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। তিনি বলেন, ‘পল্লীবন্ধু’ এরশাদ সাহেব যেন কল্পতরু। যা চাওয়া যায় তাই পাওয়া যায়। সবাই তাকে কাছের মানুষ বলে মেনে নেয়।’ অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে জেলায় জেলায় উপজেলা-উপজেলায় এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে আছে রাষ্ট্রনায়ক এরশাদের কীর্তি। তার ৯ বছর দেশ শাসনের ইতিহাস সৃষ্টি আর সংস্কারের ইতিহাস। দেশকে উন্নয়নের জোয়ারে এগিয়ে নেয়ার ইতিহাস। যে কারণে এদেশের মাটি থেকে, ইতিহাসের পাতা থেকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নাম কোনোভাবেই মুছে ফেলা সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, যতদিন বেঁচে থাকবে তার প্রতিষ্ঠিত উপজেলা, গুচ্ছগ্রাম, যতদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ, মুজিব নগরের স্মৃতিসৌধ, তিন নেতার মাজার, বায়তুল মোকাররম মসজিদের চারদিকের লালিত্য যতদিন রেডিও টেলিভিশনে শোনা যাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধুর ধ্বনি, যতদিন ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে, যতদিন রেডিও-টিভিতে সংবাদ প্রচারের আগে শোনা যাবে মহান মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শ্রদ্ধাভরা সঙ্গীত সব কটা জানালা খুলে দাও না, যতদিন দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছোট-বড় ৫০৮টি সেতু আর হাজার হাজার কিলোমিটার রাস্তা ওপর দিয়ে চলাচল করবে কোটি কোটি মানুষ আর যানবাহন, ততদিন বেঁচে থাকবে পল্লীবন্ধু এরশাদের কীর্তি, বেঁচে থাকবে তার নাম।

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম আরো বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কোনোভাবেই স্বৈরাচারের বিশ্বাস করতেন না। গণতন্ত্র ও মানুষের স্বাধীনতার প্রতি তার ছিল অগাধ বিশ্বাস। তিনি যদি স্বৈরাচারী হতেন তাহলে তার শাসন আমলে তার বিরোধীরা স্বৈরাচার শব্দটি উচ্চারণ করার সুযোগও পেতেন না। তিনি যদি স্বৈরাচার হতেন, তাহলে কোনো পত্রিকার পাতায় স্বৈরাচার শব্দটি লিখতে পারতেন না কেউ। তিনি যদি স্বৈরাচার হতেন তাহলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অন্যান্য আমলের মতো গুলি করে পাখির মতো মানুষ মারতেন। তিনি যদি স্বৈরাচার হতেন তাহলে ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণ করে উপজেলা সৃষ্টি করতেন না। উপজেলা ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতেন না। তিনি যদি স্বৈরাচার হতেন তাহলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতেন। জনতার হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে চার চারবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিতেন না। তিনি স্বৈরাচারী হলে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে জনপ্রতিনিধি হিসেবে মহান সংসদে আসতে পারতেন না। তিনি স্বৈরাচারী হলে সংসদে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার আসন অলঙ্কিত করতে পারতেন না।

মাননীয় স্পিকার বাংলাদেশের রাজনীতি ও উন্নয়ন অগ্রগতির ইতিহাসে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একটি মাইলফলক। সবচেয়ে বড় কথা স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু আদর্শে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে সমুন্নত করার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক অক্লান্ত যোদ্ধা। তাকে হারিয়ে আমরা ব্যথিত। শোকাভিভূত। আমরা তার রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা আল্লাহ যেন দেন সেই দোয়া করছি। আমিন।

মাননীয় স্পিকার ধন্যবাদ আপনাকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়