শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০৬:০৫ সকাল
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ০৬:০৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চার ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে ফাটল?

ডেস্ক রিপোর্ট  : নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছে। ভারতের বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আস্তে আস্তে অস্বস্তি ডানা মেলতে শুরু করেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টেলিআলাপের পর এই অস্বস্তিগুলো আরো প্রকাশ হতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই দেশের সম্পর্কের ব্যাপারে এখনি যদি নজর দেওয়া না হয় তাহলে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে। যে চারটি বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে এখন অস্বস্তি তৈরী হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে;

১. আসামে নাগরিক তালিকা: আসামে যে সর্বশেষ নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে ১৯ লক্ষ লোককে ভারতের নাগরিক নয় বলে বলা হয়েছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই তালিকা চুড়ান্ত নয়। যারা নাগরিকত্বের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন তারা ১২০দিনের মধ্যে বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারবেন। এই আপিলের পর তাদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। কিন্তু অনেকে মনে করছেন, এই তালিকায় যে মুসলিম জনগোষ্ঠী আছে তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর একটা প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। ইতিমধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় একজন মন্ত্রী এবং বিজেপি নিয়ন্ত্রিত আসামের রাজ্য সরকারের একজন মন্ত্রীর এরকম বক্তব্যও দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে একটি অস্বস্তির কাটা বিদ্ধ করেছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, আসামের নাগরিক তালিকা তাদের অভ্যান্তরীণ বিষয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরকালে আশ্বস্ত হয়ে এসেছেন যে, এই বিষয়টিতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। কিন্তু প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হলেও এটি বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে একটা বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এটা একটি ভারত বিরোধী মনোভাবের প্লাটফর্ম হিসেবেও কাজে লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকার কতটা যে সচেতন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কূটনৈতিক মহল। একই সঙ্গে এখনই যদি সরকার ভারতের সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি কাটিয়ে খোলামেলা আলোচনা না করে তাহলে এর মাশুল ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে দিতে হবে বলে অনেকে মনে করছেন।

২. কাশ্মির ইস্যু: সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছে ভারত সরকার। বিজেপি তার নির্বাচনী ইশতেহারে অঙ্গিকারও করেছিল ক্ষমতায় আসার পরপরই খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাশ্মিরের স্বতন্ত্র বাতিল করে তাকে কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় আনা হয়েছে। বাতিল করে তাকে কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় এনেছে। যদিও বাংলাদেশ আসামের মত এই বিষয়টিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলছে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের কোনকিছু করণীয় নেই বলছে। কিন্তু গতকাল পাকিস্তানের পররাষ্টমন্ত্রি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে টেলিফোন করেন এবং তাঁদের মধ্যে কাশ্মীর বিষয় নিয়ে টেলি আলাপ হয়। এই টেলি আলাপে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের যে ঘটনা সেটি জাতিসংঘের লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন, মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বিবৃত করেছে। যদিও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি। কিন্তু ভারতের কূটনৈতিক মহলে এই নিয়ে চাপা অসন্তোষ স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। ভারত মনে করছে গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ ভারতের পরীক্ষিত মিত্র, বিশেষ করে বাংলাদেশ- পাকিস্তানের সম্পর্কর অবস্থান ভারতের পক্ষে ছিল সুস্পষ্ট। হঠাত করেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনটি ভারতের কেউ কেউ ভালো চোখে নেয়নি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের স্পষ্ট বক্তব্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে দুদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে শীতলতা তৈরি হতে পারে বলে অনেক কূটনৈতিক মহল মনে করছে।

৩. চীনের সঙ্গে সম্পর্ক: আজ বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি উচ্চ পর্যায়ের দল চীন সফরে গেছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরুর নেতৃত্বে ২০ সদস্যের এই দলটির সফর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে। বাংলাদেশ কি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নয়নের দিকে এগুচ্ছে? যদিও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি একটি দুর্বল দল পাঠানো হয়েছে। এটি স্রেফ সৌজন্য সফর। দুইদেশের রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে পারস্পারিক সম্পর্কের আদান প্রদানের রীতি হিসেবেই এই সফর হয়ে থাকে। এটি নতুন কিছু নয়। কিন্তু চিনের সঙ্গে ক্রমাগত বানিজ্যের ব্যাপ্তির ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপটে এই সফরকে গুরুত্ব সহকারে দেখচে ভারত।

৪. রোহিঙ্গা ইস্যু: রোহিঙ্গা ইস্যু ক্রমশই বাংলাদেশের বিষফোড়ার মত দেখা দিয়েছে। এই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে যে সহায়তা চেয়েছিল সে সহযোগিতা পায়নি। এই বিষয়টিতে বাংলাদেশের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গিবাদি তৎপরতার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততা এবং তাদের বিভিন্ন রকম তৎপরতায় বাংলাদেশ সরকার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। একই সাথে এ ব্যাপারে ভারতের নিরবতায় বাংলাদেশ হতাশ হয়েছে। বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক নিয়ে কাজ করেন এমন কূটনৈতিকরা মনে করছেন দু দেশের সম্পর্ক যে নতুন উচ্চতায় উঠেছিল সেই নতুন উচ্চতায় ধরে রাখতে সাম্প্রতিক সময়ের ইস্যুগুলোর দিকে নজর দেওয়া উচিত এবং এই নজর না দিলে এই সম্পর্কের অবনতি হতে সময় লাগবে না।

বাংলা ইনসাইডার

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়