নূর মাজিদ : বাংলাদেশের মেঘনাঘাটে ৭৫০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জাপানি কোম্পানি জিরার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে ভারতের রিলায়েন্স। গত মঙ্গলবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে যৌথ অংশীদারিত্বের চুক্তির কথা জানায়, অনীল আম্বানির নেতৃত্বাধীন রিলায়েন্স পাওয়ার। চুক্তি অনুসারে নির্মাণকাজের ৫১ শতাংশ অংশীদারিত্ব থাকবে ভারতীয় কোম্পানিটির হাতেই, বাকি ৪৯ শতাংশ থাকবে জিরার কাছে। খবর : ইকোনমিক টাইমস, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস।
বিবৃতিতে কোম্পানি চেয়ারম্যান অনিল আম্বানি বলেন, ‘যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং শিল্পোৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। এছাড়াও, এলএনজির মাধ্যমে দেশটির বিদ্যুৎ চাহিদা পরিচ্ছন্ন এবং কার্যকর উপায়ে পূরণ করা সম্ভব হবে।’
২০১৫ সালে রিলায়েন্স পাওয়ার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মেঘনাঘাটে ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। যার প্রথমধাপে ৭৫০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং গ্যাস টার্মিনাল নির্মাণে ১শ কোটি ডলার বিনিয়োগের কথা রয়েছে।
রিলায়েন্স এবং জিরা যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বিদ্যুৎক্রয় এবং কেন্দ্রস্থাপনের জন্যে ভূমি ইজারার চুক্তি করবে। কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের জন্যে পেট্রো-বাংলার অঙ্গ প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাসের সঙ্গে চুক্তি করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি হবে জ্বালানি, বিদ্যুৎ এবং খনিজ স¤পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। আলোচিত চুক্তিগুলো হওয়ার ৩৬ মাস বা তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে।
এদিকে রিলায়েন্স পাওয়ারের শীর্ষ নির্বাহী কে রাজা গোপাল ভারতীয় দৈনিক ফিন্যান্সিসিয়াল এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘অর্থনৈতিক তথ্য প্রদানে আমাদের নয় মাস সময় দেয়া হবে। বর্ধিত সময় দেয়া হবে আরো ৩ মাস। অর্থনৈতিক তথ্য জমা দেয়ার পরেই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হবে।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি সরবরাহে চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছি। যা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অন্যতম প্রধান অংশ। প্রকল্পের প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ৫৪৩০ কোটি রুপি বা ৭৫ কোটি মার্কিন ডলার। বর্তমানে আমরা অর্থনৈতিক প্রস্তাব তৈরির উদেশ্যে কাজ করছি, তবে একইসঙ্গে বাংলাদেশের কাছ থেকে আরো সুবিধা পাওয়ার আশাও করছি। আরো বেশি সুবিধা পেলে আমরা সেই অনুসারেই চুক্তি করব।’
প্রথমধাপ কার্যকরে অন্ধ্র প্রদেশের সামলাকোট বিদ্যুৎকেন্দ্রে স্থাপনের উদ্দেশ্যে ক্রয় করা একসেট যন্ত্রপাতি মেঘনাঘাটে স্থাপন করবে রিলায়েন্স। এই স্থানান্তরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিম ব্যাংকের কাছে নিজেদের ১১ কোটি ৬০ লাখ ডলার বকেয়া পরিশোধ করতে পারবে কো¤পানিটি। মার্কিন এক্সিম ব্যাংকের কাছে রিলায়েন্সের মোট দেনার পরিমাণ ৫০ কোটি ডলার। ইতিমধ্যেই ১৫ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। রাজা গোপাল জানান, ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ নাগাদ রিলায়েন্স পাওয়ারের মোট দেনা ছিলো ২৮ হাজার কোটি রুপি। সম্পাদনা : ইমরূল শাহেদ
আপনার মতামত লিখুন :