শনিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, এ বিষয়ে ভারতের আশ্বাসের প্রতি বাংলাদেশ বিশ্বাস রাখে। বিবিসি
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ২০শে অগাস্ট ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের ঢাকা সফরের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
''সেখানে তিনি (জয়শংকর) স্পষ্ট করে বলেছেন যে, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং (বাংলাদেশের জন্য) কোন সমস্যা হবে না।''
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ''এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, তাই আমরা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।''
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসীন বলছেন,
আমি মনে করি, বাংলাদেশের যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে। রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে যে ঘটনা ঘটে গেছে, সেরকম পরিস্থিতি যাতে আর তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে বাংলাদেশের সতর্ক থাকা উচিত। বাংলাদেশের সরকারের জোরালোভাবে দাবি করা উচিত, যে এরা বাংলা ভাষায় কথা বললেও, তারা বাংলাদেশি নাগরিক না।''
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, ভারতের তালিকা থেকে বাদ পড়াদের বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বাংলাদেশে ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হতে পারে।
সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির মনে করেন, এখনি উদ্বিগ্ন না হলেও বাংলাদেশের সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ যেভাবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তালিকায় বাদ পড়াদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে, ভবিষ্যতে সেটা একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এখনো এই তালিকায় বাদ পড়াদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা বা বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সরকারি তরফে কিছু বলা হয়নি। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের বক্তব্যে তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বলছেন, ''তালিকায় শেষ পর্যন্ত যারা বাদ পড়বে, তাদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাতে ভারতের দিক থেকে কোন একটা সময়ে একটা প্রচেষ্টা হতে পারে। তবে এ ধরণের ঘটনায় দ্বিপাক্ষিক একটি বিষয় থাকে। সেখানেই এই বিষয়টা পরিষ্কার করতে হবে। এটা যেন সেই পর্যায়ে না গড়ায়, এজন্য এখন থেকেই বক্তব্য তুলে ধরতে হবে। ''
হুমায়ুন কবীর বলেন,''এতো মানুষকে বাংলাদেশ গ্রহণ না করলে ভারত জোর করে পাঠাতে পারবে না। একপাক্ষিক ব্যবস্থা ভারত নেবে আমার মনে হয় না। কাউকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চাইলে ভারত আলোচনার মাধ্যমে কোন ব্যবস্থার মধ্যে যাবে।
''ভারত প্রস্তাব দিলেও সেটা তো আর আমাদের গ্রহণ করতে হবে না। অভারতীয় হলেই বা বাংলাভাষী মুসলিম হলেই তো আর বাংলাদেশি হয়ে যায়না। সেটা জোরালোভাবে বলতে হবে। সুতরাং ভারতের অভ্যন্তরীণভাবেই এই বিষয়টা সমাধান করতে হবে।''
হুমায়ুন কবির অবশ্য মনে করেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক থাকার পরো এ ধরণের ঘটনা যে ঘটবে না সেটা বলা যায় না। সম্পাদনা : কায়কোবাদ মিলন
আপনার মতামত লিখুন :