নূর মাজিদ : সৌদি আরবের শীর্ষ বন্দর পরিচালনাকারি কোম্পানি রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল (আরএসজিটি) বাংলাদেশের বন্দর উন্নয়নে বিনিয়োগে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যেই কোম্পানিটি বাংলাদেশের নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকেও স্বাক্ষর করেছে। যার আওতায় সম্ভাব্য পুঁজি নিবেশের পরিমাণ সাড়ে ৩শ কোটি ডলার হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা দেশগুলোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির যে পদক্ষেপ দেশটি নিয়েছে তার অংশ হিসেবেই বাংলাদেশে সৌদি আরএসজিটি বিনিয়োগ করতে চাইছে। খবর : আরব নিউজ।
এদিকে সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুস সামাদ। এবং আরএসজিটির পক্ষে ছিলেন কোম্পানিটির বৈশ্বিক বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালক গগন সিকাসারিয়া।
চুক্তি অনুসারে কোম্পানিটি চট্টগ্রাম বন্দরেরত টার্মিনাল ব্যবস্থার উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে। এই বন্দর দিয়েই দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ নৌ-বাণিজ্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গতবছর চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষ প্রায় ৩০ লাখ ফুট ইউনিট পণ্য এবং ৩ হাজার ৭শ জাহাজ হ্যান্ডেল করছে।
তবে সমুদ্র বন্দরের টার্মিনাল ছাড়াও ইনল্যান্ড কন্টেইনার টার্মিনাল সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও বিনিয়োগের উদ্দেশ্য কোম্পানিটির রয়েছে। যার আওতায় গাজীপুরের পুবাইলে একটি ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ করতে চাইছে সৌদি কোম্পানিটি। এছাড়াও দেশের অন্য দুই সমুদ্রবন্দর মংলা এবং পায়রাতেও অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা এবং কারিগরি অভিজ্ঞতা দিয়ে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরে নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের যৌথ সচিব রফিক আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, ‘আমরা আরএসজিটির সঙ্গে একটি উন্মুক্ত খসরা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ এবং সম্ভাব্য দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে এই সমঝোতায় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।এখন দুই পক্ষই বিনিয়োগের নির্দিষ্ট ক্ষেত্রগুলোকে চিহ্নিত করার কাজ করবে। নতুন এই বিনিয়োগ কার্যক্রম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেল অনুসারেই পরিচালনা করা হবে।’
বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃপক্ষের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আরএসজিটি সাড়ে ৩শ কোটি মার্কিন ডলার বা ১৩শ কোটি সৌদি রিয়াল বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে বন্দর উন্নয়ন সব সময়ই একটি বিশাল এবং জটিল কাজ। এই কারণেই চলতি বছরের শেষ নাগাদ আমরা খুঁটিনাটি বিষয়াদিসহ চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া স¤পন্ন করতে পারব বলে আশা প্রকাশ করছি।’
দেশের বন্দর উন্নয়নে অন্যান্য আন্তর্জাতিক কোম্পানিও অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে, বলেও তিনি জানিয়েছেন। আমিনুল ইসলাম আরো বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতি সঞ্চারের লক্ষ্যে আমরা সাড়া দেশের সড়কপথ এবং যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন করছি। বাণিজ্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পরিবহণ সক্ষমতাও যার কারণে বাড়ছে। এখন আমাদের বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ করতে হবে।’
সম্পাদনা : খালিদ আহমেদ/সারোয়ার
আপনার মতামত লিখুন :