স্বপ্না চক্রবর্তী : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্ববাণিজ্যে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। উরুগুয়েসহ মার্কোসারভুক্ত দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। দক্ষিণ আমেরিকার বাণিজ্যিক জোট মার্কোসার (ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের সমন্বয়ে গঠিত) ভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের বিপুল চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ উচ্চ আমদানি শুল্ক হারের কারনে পণ্য রপ্তানি করতে পাচ্ছে না। এ আমদানি শুল্কহার কমানোর বিষয়ে উরুগুয়ে সরকার পদক্ষেপ গ্রহন করলে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি করা সম্ভব।
শনিবার বাণিজ্যমন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উরুগুয়ে সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গত শুক্রবার মনটিভিডিওতে উরুগুয়ের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী রোডালফো নিন নোভোয়ার সাথে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এ সব কথা বলেন। এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও উরুগুয়ের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমান খুবই সামান্য। উভয় দেশ উদ্যোগ গ্রহন করলে এ বাণিজ্যের পরিমান উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা সম্ভব। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ উরুগুয়েতে ১১.৬৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ১৩.৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তুলছেন। এগুলোর বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ সরকার এখানে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। উরুগুয়ের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের স্পোল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন।
উরুগুয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোডালফো নিন নোভোয়ার সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিষয়ে সম্পর্ক জোরদারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি মার্কোসারের আগামী শীর্ষ সম্মেলনে আলোচানার জন্য উত্তাপন করার ঘোষণা দেন। আমদানি শুল্ক হ্রাস বা এফটিএ স্বাক্ষর করা হলে উভয় দেশ উপকৃত হবে। পারস্পরিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য সুবিধাজনক সময়ে তিনি বাংলাদেশ সফর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির এ সফরের ফলে ব্যবসায়ী পর্যায়ে সফর বিনিময়, কৃষি, মৎস ও পশুপালন খাতে সহায়তা প্রদান ও সাংস্কৃতিক দলের সফর শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। উরুগুয়ে সফরের জন্য ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং কূটনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভিসা অব্যাহতির বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
এরপর বাণিজ্যমন্ত্রী উরুগুয়ের অর্থমন্ত্রী ডানিলো আস্টোরির সাথে বৈঠক করেন। উক্ত বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাংলাদেশ থেকে অধিক পরিমাণে তৈরি পোশাক, ঔষধ, পাট, জুতা, প্লাস্টক সামগ্রী আমদানির জন্য উরুগুয়েকে অনুরোধা জানান। বাংলাদেশের চমৎকার বিনিয়োগ পরিবেশ এবং বিভিন্ন প্রণোদনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য তিনি উরুগুয়েকে অনুরোধ করেন। উরুগুয়ের অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের সাথে অধিক বাণিজ্যের উপর জোর দেন। এছাড়া, বাংলাদেশের প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি যেন মার্কোসারের আগামী শীর্ষ সম্মেলনে উত্থাপিত হয়, সে বিষয়ে উরুগুয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে মর্মে বাণিজ্যমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
আপনার মতামত লিখুন :