সমীরণ রায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সবচেয়ে বড় প্রভাব ছিল বাংলাদেশের অগ্রগতি পিছিয়ে পড়া ও দেশের উন্নয়নে ধীরগতি আসা।
শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত ‘১৫ আগস্ট ও বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৭৫’র থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৩ দশিমক ২ শতাংশ। আর বিগত ১০ বছরে আমাদের গড় প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। এ থেকে বোঝা যায় যে, বঙ্গবন্ধু হত্যার সবচেয়ে বড় যে নেতিবাচক প্রভাব আমাদের ওপর পড়েছে, সেটি হল বাংলাদেশের অগ্রগতি পিছিয়ে পড়া, উন্নয়নে ধীরগতি আসা। আমরা এখনও ডেভেলপিং কান্ট্রি হিসেবে রয়ে গেছি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। সমাজে মানুষে মানুষে যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না, বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শ থেকে আমরা পিছিয়ে গেছি। তবে আশার কথা হচ্ছে যে, তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা এখন হাল ধরেছেন। আমাদের মাঝে নতুন করে আশা জাগিয়েছেন।
বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারের কাছে সম্ভাবনাময়ী দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি যখন বিদেশি বিনিয়োাগকারীদের সঙ্গে কথা বলি, তাদের এটা বলি না যে, আমাদের সাহায্য করতে বিনিয়োগ কর। বরং এটা বলি যে, নিজেদের স্বার্থে বিনিয়োগ কর। কারণ তোমরা আয় করতে চাও। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে এখন রিটার্ন অব ইনভেনস্টমেন্ট সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধ্বংস করা। কিন্তু ঘাতকরা যখন দেখল সেটি সম্ভব হয়নি, তাই শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করেছে। এই চেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, এটা ভুলে যাওয়া যাবে না দেশ তার সেরা নেতা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছে। তিনি শত বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু শেখ হাসিনা আবারো স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শক্ত অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শক্ত অবস্থানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সেদেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাজি করাতে বাংলাদেশ সরকার কাজ করবে। আমরা আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের কথা শুনেছি। মানবিক দিক থেকে আমাদের যা যা করার ছিল, সব করেছি। এখন রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব মিয়ানমারের এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। মিয়ানমারকে তাদের লোকদের মধ্যে আস্থা আনাতে হবে। এই দায়িত্ব মিয়ানমারের, আমাদের না। আমরা অনেক করেছি। নিজেদের এবং এ অঞ্চলের শান্তি শৃঙ্খলা স্বার্থে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদ এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, স্পেন, সুইজারল্যান্ড ও জাপানসহ ৩০ দেশের কূটনীতিকরা। সম্পাদনা : সারোয়ার
আপনার মতামত লিখুন :