সুতীর্থ বড়াল : ভারতের হিমাচল প্রদেশের “কিন্নর”। ইন্দো-তিব্বতের সীমানার কাছের একটি জেলা। মহাভারত অনুসারে, ১৩ বছরের জন্য রাজ্য থেকে নির্বাসিত হয়েছিলেন পাণ্ডবরা। স্থানীয়দের বিশ্বাস, তারা নাকি তখন এই কিন্নরেই লুকিয়ে ছিলেন। সেই থেকেই এক যুবতীর সঙ্গে অন্য পরিবারের সব ভাইদের বিয়ে দেয়ার রীতি চলে আসছে। আনন্দবাজার
ইতিহাসবিদদের মতে, ছেলেদের বিয়ের পর জমি যেন ভাগ না হয় সেই চিন্তাভাবনা থেকেই এই ‘দ্রৌপদী’ প্রথার প্রচলন এখানে।
এমন রীতি মেনে বিয়ে করে আসার পর যতগুলো সন্তানের জন্ম তিনি দেবেন, তাদের প্রকৃত বাবার পরিচয়ের জন্য পুরো পরিবার ওই যুবতীর কথাতেই ভরসা রাখতে হয়। তবে প্রকৃত বাবা যিনিই হন না কেন, প্রতিটা সন্তান বড় ভাইকেই বাবা সম্বোধন করবে এবং বাকিদের কাকা। রীতি এমনটাই।
ওই অঞ্চলের বহু কিন্নর এখনও নিজেদের পাণ্ডবদের বংশধর বলে দাবি করেন। যদিও এই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ ইতিহাসবিদদের মতে, পাণ্ডবদের অনেক আগে থেকেই কিন্নরিদের উল্লেখ রয়েছে মহাভারতে।
কিন্তু কেন এমন রীতি? এটা কি নিছকই মনগড়া? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রীতি আত্মস্থ করার পিছনে প্রচীন কিনৌরদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি একটা বড় কারণ।
পাহাড়ি, দুর্গম এলাকা হওয়ায় কিন্নরের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভালো ছিলো না। প্রতিটা পরিবারেরই সম্বল ছিলো নামমাত্র জমি। তা এতোটাই কম ছিলো, যে ভাইদের মধ্যে পরবর্তীকালে ভাগাভাগি হলে সে ভাগের জমি থেকে যা আয় হবে তাতে সংসার চালানো কার্যত অসম্ভব।
কিন্নরিদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে এখন অনেকটাই ভালো। পর্যটন শিল্পের বিকাশ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। পলিঅ্যান্ড্রির চল তাই আগের থেকে এখন অনেকটাই কমেছে কিন্নরে।
পলিঅ্যান্ড্রি বা পলিগ্যামি। অর্থাৎ মহিলা বা পুরুষের একাধিক যৌন সম্পর্ক। এই শব্দযুগল নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কারও মতে এটা খুবই স্বাভাবিক। কারও মতে, একাধিক যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়াটা ঘোর অন্যায়। বিশেষ করে বর্তমানে আমাদের সমাজে এটাকে অন্যায় বলেই দেখা হয়। মূলত কিন্নরে পলিঅ্যান্ড্রি চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :