হ্যাপি আক্তার : স্বর্ণের বাজারকে যখন নীতিমালার আওতায় আনার চেষ্টা করছে সরকার, তখন বেড়েই চলেছে স্বর্ণের দাম। গত দেড় মাসে স্বর্ণের দাম পাঁচবারে ভরিতে প্রায় ৬ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন ৪:৩০
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির যুক্তি দেখাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা তাদের বেশি লাভের প্রবণতার ফল।
স্বর্ণের বাজার এখনও সরকারের নিয়ন্ত্রেণের বাইরে। দেশে কি পরিমাণ স্বর্ণ রয়েছে তার হিসাবও নেই। অভিযোগ রয়েছে, দেশে যে পরিমাণ স্বর্ণ কেনাবেচা হয় তার অন্তত ৮০ ভাগই আসে চোরাই পথে, যা থেকে সরকার কোনো শুল্ক পায় না।
মার্চে স্বর্ণ আমদানির নিয়ম রেখে চূড়ান্ত করা হয় নীতিমালা। এরইমধ্যে আমদানির জন্য ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানি শুরুর আগে বাজারে স্বর্ণের সরবরাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে নিলামে স্বর্ণ বিক্রির কথা থাকলেও, তা চালু হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখন আমাদের যে পর্যায়ের স্বর্ণ আছে সেগুলো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে, তবে সে বিষয়ে এখনো ফয়সালা হয়নি। সুতরাং, নিলামে বিক্রি করার মতো স্বর্ণ এখনো আমাদের নেই।
বছরের শুরুতে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি ছিলো ৪৮ হাজার ৯’শ ৮৮ টাকা, এখন দাম ৫৬ হাজার ৮’শ ৬২ টাকা। গত সাড়ে ৭ মাসে ৮ দফা স্বর্ণের দাম বেড়েছে। এরইমধ্যে ছাড়িয়ে গেছে গত ৭ বছরের সর্বোচ্চ দরের রেকর্ড।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক স্বর্ণের বাজারে। ফলে দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তবে, ব্যবসায়ীদের এই যুক্তি মানতে পারছেন না অর্থনীতিবিদিরা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, স্বর্ণের দাম বাড়ার সাথে সাথে যদি না বাড়ানো হয় তাহলে দেশ থেকে স্বর্ণ পাচার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর দাম কমার সাথে সাথে যদি তা কমানো না হয়, তাহলে গ্রাহক পাশ্ববর্তী দেশ থেকে নেবার প্রবণতা থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, বৈধ পথে স্বর্ণ আনার জন্য যেহেতু নজরদারি বেড়েছে এবং করের বিষয়টি এসেছে। যে কারণে সম্পূর্ণ বিষয়টি ক্রেতার ওপর চাপিয়ে দেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
স্বর্ণের বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আমদানি প্রক্রিয়া দ্রুত চালুর পরামর্শ বিশ্লেষকদের। সম্পাদনা : সুতীর্থ/মঈন
আপনার মতামত লিখুন :