শিমুল মাহমুদ : আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রার্থীদের অবশ্যই ‘অবিবাহিত’ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে মনোনয়নপত্র নেয়া ১১০ প্রার্থীর মধ্যে সভাপতি পদে ১০ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন বিবাহিত নেতার নাম আসছে বলে ছাত্রদলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
ইতিমধ্যে নির্বাচন পরিচালনার জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতা খায়রুল কবিরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হকের নেতৃত্বে পাঁচজনের বাছাই কমিটি এবং শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আপিল কমিটির প্রধান ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ছাত্রদলের কমিটির দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছি। এর মধ্যে একটি ছাত্রত্ব, অন্যটি অবিবাহিত। ফলে বাছাই কমিটি এ দুটি বিষয় প্রমানে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র চাইবে। প্রার্থীরা প্রমাণে ব্যর্থ হলে নির্বাচন কমিটি ব্যবস্থা নেবে।
কমিটির আরেক সদস্য ও বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ছাত্রদলে গঠনতন্ত্রের বাইরে মনোনয়নপত্রে কোনো অসংগতি থাকলে তা যাচাই-বাছাইয়ে বের হয়ে আসবে। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিটি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীদের মধ্যে বিবাহিত নেতা রয়েছেন - আল মেহেদি তালুকদার , আরাফাত বিল্লাহ খান, আজিম উদ্দিন মেরাজ, মো. আব্বাস আলী, মাইনুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ ভদ্র, নজরুল ইসলাম নাহিদ, সিহাবুর রহমান। আর সাধারণ সম্পাদক পদে যেসব বিবাহিত নেতারা মনোনয়নপত্র কিনেছেন তারা হলেন- নাদিয়া পাঠান পাপন, সিরাজুল ইসলাম, মাহমুদুল আলম শাহিন।
এ বিষয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ করা সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পদপ্রত্যাশী এবং আমার প্রতিদ্বন্দ্বীরা এ ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়াচ্ছে। আমি বিবাহিত নই। যারা এ অভিযোগ তুলেছেন, তারা এ বিষয়ে কোনও ডকুমেন্ট দেখাতে পারবে না। আমাকে রাজনৈতি মহলে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ডালিয়া রহমান বলেন, নারীদের ব্যাপারে বাজে গুজব ছড়ানোটা সহজ। মাঝেমধ্যে এমন সব গুজব শুনি, তাতে খুব বিব্রত হই, লজ্জা পাই। এটাও বোধ হয় ভোটের আগে নির্বাচনী মাঠের একটা লড়াই।
প্রার্থী বাছাই কমিটির প্রধান ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, আমরা মনগড়া কিছু করতে পারবো না। কারণ আমাদের একটা বিধি-বিধান আছে। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিটি কাজ করবে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই ২০০০ সালে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। প্রার্থীদের অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রত্ব আছে এমন প্রমাণপত্র অবশ্যই প্রার্থীদেরকে দাখিল করতে হবে। প্রার্থীকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে এবং পাসের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। প্রমাণের জন্য সকল সার্টিফিকেটের মূল কপি প্রার্থীদেরকে নিয়ে আসতে হবে।
গত শনি ও রোববার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর গতকাল সোমবার প্রথম দিনে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্যরা আজ মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন বলে জানা গেছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোট ১১০ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৪৪ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন ৬৬ জন।
আপনার মতামত লিখুন :