নূর মাজিদ : অর্থনীতিতে বড় মানেই যদি সুন্দর হয় ,তাহলে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানির ভারতের রিলায়েন্সের পেট্রোলিয়াম ব্যবসার ২০ শতাংশ কিনে নেয়ার চাইতে সুন্দর কিছুই হতে পারেনা। এই ক্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্বের বৃহৎ তেল উৎপাদক আরামকো বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি তেল পরিশোধনাগারের এক-পঞ্চমাংশ মালিকানা সাড়ে ৭ হাজার কোটি ডলারে কিনে নেবে। চুক্তির পর অবশ্য রিলায়েন্সের ব্যবসায় মাত্র দেড় হাজার কোটি ডলারের মালিকানা থাকবে আরামকোর অংশে। খবর : দ্য প্রিন্ট।
এটি এক ব্যাপক উদার বাণিজ্যিক ক্রয় প্রস্তাব। গত এপ্রিলেই প্রথম এই চুক্তির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে এমন শিরোনাম করে ব্লুমবার্গ নিউজ। অবশ্য তখন আলোচিত অর্থের মাত্র অর্ধেক অঙ্ক নিবেশের কথা প্রকাশ করা হয়। মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের সার্বিক বাজারমূল্য ১৩ হাজার ৪শ কোটি ডলার। যার মধ্যে ফোন এবং জ্বালানির খুচরা ব্যবসায়ের পুঁজিবাজার মূল্য যথাক্রমে ৬ এবং ৮ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি। সেই হিসেবে রিলায়েন্সের পরিশোধন ব্যবসায় যে বিনিয়োগ আসছে তার চাইতে বাজারমূল্য ৩০ শতাংশ কম। অর্থাৎ বাজারদরের চাইতে সাড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ বেশি মূল্য অফার করেছে আরামকো। চুক্তি স্বাক্ষরের পর আরামকো বিশ্বের বৃহত্তম রিলায়েন্সের জামনগরের রিফাইনারিতে দৈনিক ৫ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করবে। গুজরাটের এই পরিশোধনাগারটি দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেল তেল পরিশোধনের সক্ষমতা রাখে। এবং ২০৩০ সালের মধ্যে মুকেশ এই সক্ষমতা দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
আরামকোর বিনিয়োগ একইসঙ্গে ভারতের সর্ববৃহৎ বিদেশী বিনিয়োগের রেকর্ড গড়বে। কিন্তু, প্রশ্ন হলো ভারতে অতিমূল্য দিয়ে সৌদি আরব কেন এই বিনিয়োগ করছে, সেই উদ্দেশ্য নিয়ে। এমন সময়ে এই বিনিয়োগ আসছে যখন কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছে। আবার সৌদির ঘনিষ্ঠ মিত্র পাকিস্তান সরকার ভারতের পক্ষ থেকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সরাসরি বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
সৌদি আরবের ক্রয় সিদ্ধান্ত খুব সম্ভবত আরামকোর বাণিজ্যিক সাফল্য এবং সক্ষমতা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তে কোম্পানিটি মাত্র দশ সপ্তাহেই দেড় হাজার কোটি ডলার মুনাফা করছে। এই সময়ে আরামকো মোট ৩ হাজার ৮শ কোটি ডলার মুনাফা অর্জন করে বিশ্বের সেরা লাভজনক কো¤পানির অবস্থান ধরে রাখে। তেলের দুর্বল বাজারের মধ্যেই এই সাফল্য ধরে রাখে তারা। যা আরামকোকে উদীয়মান দেশগুলোর বাজারে নিজেদের জ্বালানি ব্যবসার বিকাশের দিকে মনোযোগী হতে প্রেরণা দিচ্ছে। সম্পাদনা : আসিফুজ্জামান পৃথিল
আপনার মতামত লিখুন :