শিরোনাম
◈ সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে: মির্জা ফখরুল ◈ বাংলাদেশের রাজনীতির অবনতি দুঃখজনক: পিটার হাস ◈ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বাড়লো ১০ টাকা  ◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১৫ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির

প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট, ২০১৯, ০৫:৫৭ সকাল
আপডেট : ১৪ আগস্ট, ২০১৯, ০৫:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

লবণে ক্ষারের মাত্রা দেখে মাত্র দুটি দেশ

নিউজ ডেস্ক : খাদ্যমান নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে। বিএসটিআইয়ের মান পরীক্ষায় প্রথম দফায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি ৫২টি পণ্য। এর মধ্যে তিনটি ছিল প্রাণ ও দুটি এসিআইয়ের। কেন মান রক্ষায় ব্যর্থতা, তা নিয়ে প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলমগীর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাজীব আহমেদ ও শুভংকর কর্মকার। প্রথম আলো

লবণের বাজারে এসিআই সেরা ব্র্যান্ড। আপনাদের লবণ কেন বিএসটিআইয়ের মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি?

সৈয়দ আলমগীর: আমরা লবণ বাজারজাত শুরু করি ১৪ বছর আগে। বিএসটিআই এটা এত বছর ধরে নিয়মিত পরীক্ষা করছে। এটাই তাদের কাজ। আমাদের তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে বাজারে এখন আমাদের এক থেকে দেড় কোটি কেজি লবণ থাকে। তারা চট্টগ্রাম থেকে ৬০ মাইল দূরে থাকা একটি নমুনা পরীক্ষা করেছেন। লবণে পিএইচ ভ্যালু বা ক্ষারের মাত্রা ৭ দশমিক ৪ থাকার কথা, বিএসটিআই পেয়েছে ৯। প্রথম কথা হলো, ক্ষারের মাত্রা লবণ পরীক্ষার কোনো প্যারামিটারই হওয়া উচিত না। পাকিস্তান আর উগান্ডা ছাড়া আর কোথাও লবণের মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে এটাকে প্যারামিটার হিসেবে গণ্য করা হয় না।

কেন প্যারামিটার হওয়া উচিত না?

সৈয়দ আলমগীর: এটা যদি গুরুত্বপূর্ণ কিছু হতো, তাহলে উন্নত দেশগুলো লবণে এটাকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিত। আসলে দেখার বিষয়, লবণে ময়লা কতটুকু, লবণের লবণাক্ততা ঠিক আছে কি না, আয়োডিন সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ হচ্ছে কি না, লবণে আর্দ্রতা ঠিক আছে কি না? তারপরও বিএসটিআই ক্ষারের মাত্রা দেখে। সেটা তারা দেখতেই পারে। পরীক্ষার পর তারা আমাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। আমরা বলেছি, একটা কেন, একটু বেশি নমুনা পরীক্ষা করতে। তাদের পরীক্ষায় ভুল হতে পারে, নমুনাটি খারাপ জায়গায় থাকতে পারে। দ্বিতীয় পরীক্ষায় আমরা উত্তীর্ণ হয়েছি। তার আগেই প্রথম পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হয়ে গেছে। সেখান থেকে আদালতে গেছে। আমরা বলেছি, আগে আমাদের জানালে আসলে সমস্যা কোথায় সেটা খুঁজে দেখতে পারতাম। আরও পরীক্ষাগার আছে। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা যেত। আমরা কিন্তু পরীক্ষা করে দেখেছি, সব ঠিক আছে।

আদালত তো লবণ বাজার থেকে তুলে নিতে বলেছিলেন।

সৈয়দ আলমগীর: আদালত বলেছিলেন, পরীক্ষা করে লবণ যদি গ্রহণ করার মতো হয়, তাহলে বাজারজাতের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। দ্বিতীয়বার পরীক্ষার পর আমরা সেটা পেয়েছি। বিএসটিআই তো পত্রিকায় ব্যাচ নম্বর উল্লেখ করে দিয়েছে। এর মানে হলো, শুধু ওই ব্যাচটি উত্তীর্ণ হতে পারেনি। কিন্তু অনেকে তো অতি উৎসাহী।

লবণে প্যারামিটার কয়টি থাকে? সেগুলো নিয়ে আপনারা বিএসটিআইকে কিছু বলেছেন?

সৈয়দ আলমগীর: ১৩টি। সবগুলোতেই আমরা উত্তীর্ণ হয়েছি। ক্ষারের মাত্রা নিয়ে আমরা বিএসটিআইকে বলেছি, এটা অন্য দেশে নেই। তারা বিবেচনার কথা বলেছে। আমাদের দোষ ছিল, আমরা এত দিন বলিনি।

তাহলে কি বিএসটিআইয়ের মান কাঠামো পুরোনো?

সৈয়দ আলমগীর: না। তারা অনেক কিছু দেখে এটা ঠিক করে। অন্য দেশের মান কাঠামো যাচাই করে।

ক্ষারের মাত্রা স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু ক্ষতিকর?

সৈয়দ আলমগীর: ক্ষতিকর না। প্রথমত, আমাদের লবণে ক্ষারের মাত্রা বেশি ছিল না। সেটা পরীক্ষা করে দেখেছি। এ ছাড়া লবণ মানুষ অনেক গ্রহণ করে না। দুই চামচ লবণ পানিতে মেশালে ক্ষারের মাত্রায় ভিন্নতা চলে আসে। ক্ষতিকর হলে বিশ্বের সব জায়গায় এটা এক নম্বর প্যারামিটার হতো।

আপনারা লবণের এক নম্বর ব্র্যান্ড ছিলেন। এখন কী অবস্থা?

সৈয়দ আলমগীর: এখনো এক নম্বরই আছি। শুরুতে মানুষের মধ্যে কিছুটা দ্বিধা তৈরি হয়েছিল। হওয়া স্বাভাবিক। সেটা কেটে গেছে।

বাজারে আমরা শিল্প লবণকে ভোজ্য লবণ হিসেবে বিক্রির কথা শুনি?

সৈয়দ আলমগীর: বাজারে আমাদের ব্র্যান্ডের নকল করে অথবা কাছাকাছি নাম ও মোড়ক ব্যবহার করে বহু ব্র্যান্ডের লবণ বিক্রি হয়। এটা নিয়ে আমরা সব জায়গায় চিঠি দিয়েছি। কেউ তো কিছু বলছে না। বাজারের ৭০ শতাংশ লবণ ময়লা, আর্দ্রতাযুক্ত। সেটাও দেখা উচিত। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) চিঠি দিয়ে বলেছে, বন্ডের শুল্কমুক্ত লবণ বাজারে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সেটাও ধরা উচিত। এটা ধরা খুব সহজ, কতটুকু লবণ এল, তা দিয়ে তৈরি পণ্য কতটুকু বিদেশ গেল, যাচাই করলেই তো হয়।

ধনের গুঁড়ায় অ্যাশ কনটেন্ট বেশি পাওয়ার বিষয়ে কী বলবেন?

সৈয়দ আলমগীর: ঠকানোর জন্য কোনো কিছুতে ভেজাল দেওয়া এক জিনিস। আর কোনো ক্ষেত্রে সবগুলো প্যারামিটার অনুযায়ী না পাওয়া আরেক জিনিস। ধনের গুঁড়ায় অ্যাশ কনটেন্ট সামান্য বেশি পেয়েছে। তাও একটা প্যাকেট পরীক্ষা করে। এটা কিন্তু ক্ষতিকর কিছু নয়। রোদে রাখা বা অন্য কোনো কারণে এটা হতে পারে। তবে সব মিলিয়ে পরীক্ষা ও তার পরবর্তী ব্যবস্থা ইত্যাদি ক্ষেত্রে খুব সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ, ব্র্যান্ড তৈরি করা কঠিন। সামান্য বিষয় নিয়ে দেশি ব্র্যান্ডের ক্ষতি করলে বিদেশি ব্র্যান্ড বাজার দখল করে ফেলবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়