নূর মাজিদ : যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে চীনকে মুদ্রা কারসাজিকারি দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও, এর ফলে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতার পথ বন্ধ হয়ে যায়নি। এমনকি দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য সংঘাতের সম্ভাবনাকেও অস্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বাণিজ্য সংঘাতের তীব্র প্রভাব অগ্রাহ্য করেই গত মঙ্গলবার তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। খবর : রয়টার্স।
তবে ট্রাম্প অগ্রাহ্য করলেও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে মোটেও হাল্কা করে নিচ্ছেন না। সেন্ট লুইস ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জেমস বুলার্ড বলেন, ‘ট্রাম্পের কারণে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আগামী কয়েক বছর ব্যাপক অস্থিতিশীল বৈশ্বিক বাজার পরিবেশ মোকাবেলা করতে হতে পারে।’
এদিকে গত সোমবার মুদ্রামান কমানোর পরেই ১৯৯৪ সালের পর প্রথম কোন দেশকে মুদ্রা কারসাজির অভিযোগে চিহ্নিত করে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক, স্বাভাবিকভাবেই সেই দেশটি হলো চীন। তবে এরপরেই অবশ্য চীন মুদ্রামান ফের শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেয়। তবে বাণিজ্যযুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ উস্কে দেয়ার প্রভাব স¤পর্কে আবারো যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে চীন।
দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক (পিবিওসি) গত মঙ্গলবারের দেয়া এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের (শুল্কারোপের) পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা এবং বিনিয়োগ পরিবেশে ব্যাপক নেতিবাচক প্রবণতা এবং ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করবে। এর ফলে সারা বিশ্বের অর্থনীতির ফের গতিবৃদ্ধিও বন্ধ হয়ে যাবে।
এর আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্প নতুন করে ৩০ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দেন। যার পরেই সোমবার নিজ মুদ্রার মান কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয় চীন। এর ফলেই বিশ্ব পুঁজি ও মুদ্রা বাজারে ব্যাপক দরপতন ও অস্থিতিশীলতা লক্ষ্য করা গেছে। কারণ, অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের ভয় এখন দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের সম্ভাবনার দিকে। গত সপ্তাহের টুইটে ট্রাম্প জানান, বিপুল পরিমাণ অর্থ এখন সারা বিশ্ব থেকে মার্কিন অর্থনীতিতে আসছে। একইসঙ্গে, ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন কৃষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
চীন মুদ্রার মান কমানোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে সকল কৃষিপণ্য আমদানিও স্থগিত করেছে। ট্রাম্পের প্রধানতম ভোটব্যাংক মার্কিন কৃষক সমাজ এর ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে। ২০১৮ সালে চীনা শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অর্থকরী ফসল সয়াবিন রপ্তানি গত ১৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে। সম্পাদনা : ইকবাল খান
আপনার মতামত লিখুন :