সুজন কৈরী : মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশি শ্রমিককে অপহরণ করে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপন আদায়কারী চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগ। আটক দুইজন হলেন-হামিদ হোসেন (২৪) ও আমান উল্লাহ (৪৩)।
সোমবার সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার শারমিন জাহান বলেন, পাবনার আমিনপুরের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে মাহবুব হোসেন নামের একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মাহবুব কাজ দেয়ার কথা বলে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত সহযোগীদের মাধ্যমে অজ্ঞাত স্থানে শহীদুলকে আটকে রাখে এবং নির্যাতন করে। পরে দেশে অবস্থিত স্বজনদের মোবাইলে ফোন করে শহীদুলের আর্তনাদ শুনিয়ে মুক্তিপন দাবি করে এবং টাকা দেয়ার জন্য একাধিক বিকাশ নম্বার দেয়। স্বজনরা টাকা দেয়ার পর চক্রটি তাকে ছেড়ে দেয়।
এ ঘটনায় শহীদুলের ভাই ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পাবনার আমিনপুর থানায় মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত সিআইডি শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলামের তত্বাবধানে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবু সাঈদের নেতৃত্বে একটি টিম মামলার আসামি হামিদ হোসেনকে গত জুলাই এবং তার সহযোগী আমান উল্লাহকে ৩ আগস্ট টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক তদন্তে সিআইডি জানতে পেরেছে, টেকনাফ এলাকার বাসিন্দা মাহবুব হোসেন মালয়েশিয়ায় দীর্ঘদিন অবস্থান করে তার কিছু মালয়েশিয়ার সহযোগীদের মাধ্যমে একটি চক্র তৈরি করে। ওই চক্রের মধ্যমে মালয়েশিয়ায় যাওয়া অসহায় মানুষদের ভাল কাজ দেয়ার কথা বলে কৌশলে অপহরণ করে। এরপর তাদের নির্যাতন করে স্বজনদের মোবাইলে ফোন করে অপহৃতদের আর্তনাদ শুনিয়ে মুক্তিপন দাবি করে। স্বজনরা ভুক্তভোগীকে বাঁচাতে দাবীকৃত টাকা দিতে রাজি হলে বাংলাদেশে অবস্থানরত তার সহযোগীদের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে।
শারমিন জাহান জানান, শহীদুলের স্বজনের কাছ থেকে আসামিরা ৮টি বিকাশ নম্বরে মোট ২ লাখ টাকা গ্রহণ করেছে। বিকাশ নম্বরগুলোর মধ্যে ৪টি সীম খোরশেদের নামে, ১টি সীম হামিদের নামে এবং বাকী রেজিষ্ট্রেশন করা সীমগুলোর বিকাশ হিসাব বর্তমানে মালয়েশিয়ায় পলাতক এবং মামলার অন্যতম আসামি মাহাবুবের নামে পরিচালিত হয়।
গ্রেপ্তার দুইজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সীমগুলো তাদের নামে রেজিষ্ট্রেশন করা বলে স্বীকার করেছে এবং তারা মাহবুবের নির্দেশে এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল বলে জানিয়েছে।
আটককৃত আমান উল্লাহ আমান বর্তমানে মাহবুব ষ্টোর নামক একটি দোকান চালানোসহ খোরশেদ ও মাহবুবের নামে নিবন্ধিত সকল সীম দিয়ে ব্যবসা ও সকল অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। সম্পাদনা : সাজিয়া
আপনার মতামত লিখুন :