শিরোনাম
◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১০ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির ◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস ◈ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঢাকা ফিরছিলেন রফিক, পথে প্রাণ গেল সবার ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি: ড. ইউনূসের আইনজীবী

প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট, ২০১৯, ০৫:৩৪ সকাল
আপডেট : ০৩ আগস্ট, ২০১৯, ০৫:৩৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পর্যটক ও অমরনাথের তীর্থ যাত্রীদের অবিলম্বে কাশ্মীর ত্যাগের তাগিদ, যাত্রাপথে অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার

আসিফুজ্জামান পৃথিল : প্রথমবারের মতো জম্মু-কাশ্মীর সরকার বাতিল ঘোষণা করলো অমরনাথ তীর্থ যাত্রা। একইসঙ্গে রাজ্যে আসা পর্যটকদের যত দ্রুত সম্ভব কাশ্মীর ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের অমরনাথের যাত্রাপথে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, একটি ল্যান্ডমাইন আর একটি স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করে দেশটির সেনাবাহিনী। ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, এই পথে তীর্থযাত্রীদের উপর বড় ধরণের হামলার পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গী সংগঠনগুলো। এনডিটিভি, ইয়ন, আনন্দবাজার, এএনআই।

রাজ্য সরকার এই সক্রান্ত একটি জারি করা পরিপত্রে বলেছে, সন্ত্রাসবাদী হুমকির বিষয়ে সর্বশেষ গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে মাথায় রেখে আমরা এই পরিপত্র জারি করছি। নির্দিষ্টভাবে অমরনাথ যাত্রার উপর হুমকি রয়েছে। কাশ্মীর উপত্যকার নিরাপত্তাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে। পর্যটক ও অমরনাধ যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা তাদের নিজেদের ভ্রমণ সংক্ষিপ্ত করার পরামর্শ দিচ্ছি।’

এই সিদ্ধান্তের প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, কাশ্মীরে জঙ্গী ও নিরাপত্তা সঙ্কট তীব্র থাকার সময়েও অমরনাথ যাত্রা বাতিলের নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেনি। বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা প্রস্তাব প্রভাব ফেলেছে এই ঘটনায়। মধ্যস্থতার বিষয়টি কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধা ও আপামর জনসাধারণকে উৎসাহিত করেছে। যা প্রবল প্রভাব ফেলেছে ভারত সরকারের অভ্যন্তরে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, সরকার আসলে কাকে ভয় পাচ্ছে। পাকিস্তানকে, না কাশ্মীরের জনরোসের সম্ভাবনাকে।

কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহমুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাহ তীব্র ভাষায় কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করেছেন। গত বছরের জুন থেকেই রাজ্যটি কেন্দ্র শাসনে রয়েছে। মুফতি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘শ্রীনগরের রাস্তায় সম্পূর্ণ গোলাযোগ চলছে। মানুষ এটিএম, পেট্রোল পাম্প সহ দোকানে ছুটছেন। প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করছেন। সরকারের চিন্তা কি শুধুই পর্যটক আর তীর্থযাত্রীদের জন্য? সরকার কি কাশ্মীরের জনসাধারণকে নিজেদের ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিচ্ছে? আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ নিজের টুইটারে লিখেছেন, ‘গুলমার্গের হোটেলে থাকা আমার বন্ধুদের হোটেল ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। রাজ্য পরিবহণ সংস্থার বাসগুলোকে পেহালগাও আর গুলমার্গের পর্যটকদের আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদি অমরনাথ যাত্রাতে কোন হুমকি থাকে তবে গুলমার্গ কেনো খালি করা হচ্ছে?’ কাশ্মীরের রাজনীতিবীদরা আরো একটি প্রশ্ন রেখেছেন। তারা বলছেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার সরকারি ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্যই এমনটা করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা জরুরী।

এদিকে কাশ্মীর ত্যাগের জন্য পর্যটকদের উৎসাহিত করছে হোটেল ও হাউজবোটগুলোও। অনেক স্থান, যেখানে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি কখনই ছিলো না, সেখান থেকেও পর্যটকদের দ্রুত চলে যাওয়ার তাগিদ দিয়েছে। অনেক পর্যটক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনাকে এক্সোডাস বা দেশত্যাগের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলোও বলছে, নিজেদের মুনাফার চেয়ে তারা গ্রাহকদের নিরাপত্তার বিষয়ে অধিক সচেতন। তাই কেউ যদি বুকিং বাতিল করতে চান বা যাত্রার তারিখ এগিয়ে নিতে চান তাদের কোনো আপত্তি নেই। সম্পূর্ণ বিনামূলেই তাদের টিকিট ফেরত বা টিকিটের তারিখ বদল করে দেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে চিনার কোর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেজেএস ঢিলান জানান, কয়েক দিন ধরেই গোয়েন্দা সূত্রে খবর আসছিল অমরনাথ যাত্রাপথে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে। সেই বার্তা পাওয়া মাত্রই গোটা যাত্রাপথ জুড়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। সে সময়েই বোমা, ল্যান্ডমাইন ও এম-২৪ রাইফেলটি উদ্ধার হয়। রাইফেলটিতে একটি লং রেঞ্জ টেলিস্কোপও লাগানো ছিলো। সেনা সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া ল্যান্ডমাইনটির গায়ে যে তথ্য রয়েছে তা থেকে জানা গিয়েছে সেটি পাকিস্তানের অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতে তৈরি। আর টেলিস্কোপিক স্নাইপার রাইফেলটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। জেনারেল ঢিলান আরো জানান, তল্লাশি অভিযান এখনো চলছে। এটা থেকে স্পষ্ট যে এই ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তারা কাশ্মীরে শান্তি বিঘিœত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই হতে দেয়া যাবে না। সম্পাদনা : ইকবাল খান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়