ফারুক ওয়াসিফ : হ্যাঁ, ভয়ের শাসনে আশাহীন মানুষ এ রকম হয়ে যায়। পলিটিক্যাল ক্যানিবালিজম সোশ্যাল ক্যানিবালিজম ছড়িয়ে দেয়। সবই গভীর বিপর্যয়ের সতর্ক সংকেত, ডুবন্ত জাহাজের ঝঙঝ। বাঁচতে হলে বার্তাগুলো পাঠ করতে হবে। তারপর না আসবে সমাধান। এক ভদ্রলোকের শান্ত বিড়ালটা প্রতিবেশীর বেয়াড়া বিড়ালের খামচানি সইতে সইতে একদিন নিজেও সহিংস হয়ে উঠলো। কিন্তু শত্রু বিড়ালটাকে নয়, সে খামচাতে গেলো তার মেন্টরকে, যে তাকে খেতে-শুতে দেয়, আদর করে।
সমাজ মনস্তত্ত্বের ভাষায় একে বলে, ট্রান্সফারড অ্যাগ্রেশন বা ‘লক্ষ্য বদলে যাওয়া প্রতিহিংসা’। জেলখানার বন্দিরা মরিয়া হয়ে কারাগার ভাঙতে না পারলে মাথা ভাঙে আরেক বন্দির। বাংলাদেশের সামাজিক স্তরে এ রকম মরিয়াপনা দেখা যাচ্ছে। একদিকে রাজনীতি অপরাধীদের কারখানা হয়েছে। অন্যদিকে অপশাসন মানুষের সহনশীলতায় চিড় ধরাচ্ছে। আলজেরীয় বিপ্লবী ফ্রানজ ফ্যানো একে বলছেন ইন্টারমিডিয়েট ভায়োলেন্স বা মধ্যবর্তী পর্যায়ের সহিংসতা। ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সহিংসতা আরও ব্যাপক পর্যায়ে সামাজিক সহিংসতা হয়ে উঠছে। ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার মাঝামাঝি পর্যায় এটা। যে সমাজে মানুষ বিপ্লবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চায় না বা পারে না, সেখানে এমন আলামত বেশি দেখা যায়। সমাজদেহে জমা বিষাক্ত রক্ত এভাবে পুঁজ হয়ে বেরোয়। এর কোনো একটা এসপার-ওসপার না হলে পুঁজ ও ঘা দেখা দিতেই থাকবে। রক্ত দিতে ভয় পাই বলে এখন রক্ত নিচ্ছি, ফোড়া ফাটাতে ভয় পাই বলে তাতে নিজের রক্ত পচিয়ে পুঁজ সরবরাহ করছি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :