মৌরী সিদ্দিকা : বাংলাদেশের প্রথম নারী ফটোগ্রাফার সাইদা খানম। ১৩-১৪ বছর বয়স থেকে ছবি তোলা শুরু করেন সাইদা খানম। ৫০-এর দশকে বেগম পত্রিকার ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। বিবিসি
সাইদা খানম বলেন, আমি এটার প্রেরণা পেয়েছি আমার খালা কবি মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকার কাছ থেকে। আর আমার আপা হামিদা খানম উনি আমেরিকা থেকে ভালো ক্যামেরা নিয়ে এসেছিলেন। এক কথায় ওই ক্যামেরা পাওয়াতে আমি এগিয়ে যেতে পেরেছি। গ্রাম অঞ্চলে গিয়ে মেয়েদের ছবি তুলেছি প্রথম দিকে একটু বাধা। আমার মতো এখনকার নারীদের অত বাধার মুখে পড়তে হয় না। এটাই আমার কাছে এখন আনন্দের ব্যাপার ভালো লাগার ব্যাপার।
নারী ফটোগ্রাফার হিসেবে অনেকেই মেনে নিতে পারেন নি সায়েদা খানমকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় খুব বেশি ছবি তোলার সুযোগ হয়নি সায়েদা খানমের। তবে যুদ্ধ পরবর্তী প্রেক্ষাপট নিয়ে কাজ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার আগে তোলা এটা (একটি ছবি দেখিয়ে) ঠিক মুখোমুখি তুলেছি। তখন মেয়েদের মধ্যে প্রচণ্ড একটা জাগরণ হয়েছিলো। দেশের জন্য আমরা যুদ্ধ করতে পারি, প্রাণ দিতে পারি এমন ঢেউ এসেছিলো। পৃথিবী বিখ্যাত অনেক লোকের ছবি তুলেছেন সায়েদা খানম। কাজ করেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে।
সাইদা খানম জানান, প্রথম ছবি দেখেই চলচ্চিত্র সত্যজিত রায় বুঝতে পেরেছিলেন আমি একটু আলাদা। অন্যদের বলেছিলেন, ওর ক্যামেরা ধরার অ্যাঙ্গেল দেখেই বোঝা যায় ও ভালো ছবি তোলে। সুযোগ পেলে এখনো ক্যামেরা হাতে তুলে নেন ৮২ বছর বয়সী এই ফটোগ্রাফার।অবসরে লেখালেখি করেন, প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকটি বই।
তিনি বলেন, ছোট বেলায় বড় বড় ক্যামেরা দেখে ভয় লাগতো । কখনো আমি ভাবতে পারিনি এই ক্যামেরাই আমার সারা জীবনের সাথী হবে। সুতরাং সবকিছুর মুখোমুখি হওয়ার মতো মনোবল থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। আর পরিবারকে ক্ষেপিয়ে কোন কাজ করা ঠিক না। তাদের বুঝিয়ে যে কোন কাজে নামা উচিত। ২০১৯ সালে একুশে পদক পান দেশের প্রথম এই নারী পেশাদার ফটোগ্রাফার।
আপনার মতামত লিখুন :