শিরোনাম
◈ তিন মাসের মধ্যে সালাম মুর্শেদিকে বাড়ি ছাড়তে হবে: হাইকোর্ট  ◈ সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে জনগণকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: বিএনপি ◈ সরকারের ফাঁদে পা দেইনি, দল ছাড়িনি, ভোটেও যাইনি: মেজর হাফিজ ◈ আমার একটাই চাওয়া স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ জিম্মি জাহাজ উদ্ধারে অভিযান নয়, আলোচনা চায় মালিকপক্ষ ◈ বিএনপিকে আমরা কেন ভাঙতে যাবো, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের  ◈ হলমার্ক মামলায় তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন ◈ ভোরে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত ২০ ◈ রাখাইনে আরো একটি শহর দখল করেছে আরাকান আর্মি ◈ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির অভিযোগ, দেশে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজউক

প্রকাশিত : ২২ জুলাই, ২০১৯, ১১:২৭ দুপুর
আপডেট : ২২ জুলাই, ২০১৯, ১১:২৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একাধিক ফোনে কথা বলতেন মিন্নি!

মাজহারুল ইসলাম : বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম গাজীর খাসকামরায় ১৯ জুলাই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আড়াই পৃষ্ঠার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এ সময় বিচারক ও মিন্নি ছাড়া আর কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। যুগান্তর

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মিন্নি বলেন, গোপন একটি মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে নয়ন বন্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিফাতকে শিক্ষা দিতে বলা হয়। এই নম্বরে মিন্নি শুধু নয়নের সঙ্গেই কথা বলতেন। মোবাইল নম্বরটি নয়নের মায়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করা। রিফাত খুন হওয়ার পর ওই নম্বরে নয়নের সঙ্গে মিন্নির দীর্ঘ সময় ধরে ফোনালাপ হয়। নয়নকে মিন্নি বলেন, তুমি তো রিফাতরে কোপাইয়া মাইরা ফালাইছ। এখন তো তুমি ফাঁসির আসামি হইবা।

পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের আগে-পরে এসব কথাবার্তার ভয়েস রেকর্ড ও কললিস্ট সিডি আকারে মামলার নথিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রোববার বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, মিন্নির পরিকল্পনায় রিফাত শরীফ খুন হন। আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মিন্নি সব স্বীকার করেছেন।

জবানবন্দিতে মিন্নি বলেন, ৬ লাখ টাকা কাবিনে ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর নয়ন বল্ডের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। নয়ন বন্ডের মা সাহিদা বেগমসহ অনেকেই এ বিয়ের বিষয়টি জানতেন। পরে এ বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে মিন্নি রিফাত শরীফকে বিয়ে করেন। কিন্তু রিফাতের সাথে বিয়ের পরও নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির ঘনিষ্ঠতা ছিলো। কলেজের দেয়ালের নিচ দিয়ে মিন্নি নিয়মিত নয়নদের বাড়ি যেতেন। ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও থাকার কারণে নয়নের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারেননি।

জুনের ৩ তারিখে রিফাত শরীফ বন্ড গ্রুপের সদস্য হেলালের মোবাইল ফোন জোর করে নিয়ে নেয়ায় নয়নের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নয়ন বন্ড মিন্নিকে বলেন, রিফাতকে ফোন ফিরিয়ে দিতে বল। না হলে পরিস্থিতি খারাপ হবে। এরপর রিফাতকে মিন্নি বলেন, তুমি হেলালের ফোন ফেরত দাও। মিন্নির কথা শুনে রিফাত ক্ষিপ্ত হয়ে যান। নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ আছে জেনে মিন্নিকে প্রচণ্ড মারধরও করে রিফাত। এর পরদিনই নয়নের কাছে রিফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মিন্নি। তিনি রিফাতকে শিক্ষা দিতে বলেন। এ কথা শোনার পর নয়ন মিন্নিকে শিখিয়ে দেন, কোথায় কিভাবে রিফাতকে নিয়ে হাজির থাকতে হবে। ওই কথা অনুযায়ী মিন্নি ঘটনার দিন রিফাতকে কলেজে এসে নিয়ে যেতে বলেন। কলেজে এলে রিফাতকে সঙ্গে নিয়ে কলেজ থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসেন মিন্নি। কিন্তু পরিকল্পনা অনুযায়ী কলেজের সামনের রাস্তায় নয়নের লোকজন প্রস্তুত না থাকায় গোপন ফোন নম্বর দিয়ে নয়নের নম্বরে ফোন করে মিন্নি বলেন, তোমার পোলাপান কই। এর কিছুক্ষণ পর নয়ন বন্ডের ছেলেরা হাজির হয়। নয়ন বন্ডের সাঙ্গপাঙ্গরা রিফাতকে জাপটে ধরে প্রথমে কিল-ঘুষি এবং এক পর্যায়ে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করে।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হমায়ুন কবির বলেন, মিন্নি অনেকগুলো মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতেন। এসব নম্বর ব্যবহার করে খুনের আগে-পরে তিনি নয়ন বন্ডের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন। ওইসব সিমগুলোর কোনটিই মিন্নির নিজের নামে ছিলো না। নয়ন বন্ডের দেয়া মোটা অংকের টাকা মিন্নির একটি ব্যাংক হিসাবে রাখা আছে বলে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, নয়নের সঙ্গে মিন্নির কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড, গোপন মোবাইল নম্বরের সিম, কল লিস্ট, ভিডিও ফুটেজ ও এসএমএসসহ সব প্রমাণ সংগ্রহ করে তা মামলার নথিতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সিনেমা স্টাইলে রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়।

এমআই/এসবি

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়