আরিফা রাখি : স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসাপাতালে দীর্ঘদিন ধরে রক্তের প্লাটিলেট বিভাজন যন্ত্রটি অকেজো হয়ে পরে আছে। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পড়তে হচ্ছে বাড়তি ভোগান্তিতে। ডেঙ্গু আক্রান্ত কিছু রোগীর রক্তের প্লাটিলেট বিভাজন করে রোগীকে সাদা অংশ দিতে হচ্ছে। রক্তের এই প্লাটিলেট বিভাজনের জন্য রোগীদের যেতে হচ্ছে অন্য হাসপাতালে।
শনিবার (২০ জুলাই) মিটফোর্ড হাসাপাতালে যেয়ে দেখা গেছে, যারা রক্ত পরীক্ষা বা প্লাটিলেট বিভাজনের জন্য মিটফোর্ড হাসাপাতালের ব্লাড ব্যাংক যাচ্ছেন তাদের বিকল্প হিসাবে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। মিটফোর্ডে সামন্য কিছু নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হলেও, বাকি কাজ করতে হচ্ছে অন্য হাসপাতালে।
এ বিষয়ে মিটফোর্ড হাসাপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিকেল বিভাগ ব্লাড ব্যাংকের প্রধান কর্মকর্তা ডা. দানিশ আরেফীন বলেন, রক্ত পরীক্ষা ও প্লাটিলেট বিভাজনের মেশিনটা ৮-১০ দিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। তবে একবারে নষ্ট হয়ে গেছে, সেটা বললে ভুল হবে। রক্তের প্লাটিলেট বিভাজনের মেশিনটা লোড নিতে পারে না। বিদ্যুৎতের লো ভোলটেজ দেখায়। এর জন্যে যে পরিমাণ ভোলটেজ দরকার সেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ভোলটেজ নেই। তিনি আরও বলেন, প্লাটিলেট বিভাজনের মেশিনটা যতক্ষণ না ঠিক করা হচ্ছে ততক্ষণ রোগীদের বিকল্প পথ হিসেবে এমন বিষয়ে রোগী আসলে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও শান্তিনগরের কোয়ান্টামে গিয়ে রক্তের অংশের ভাগ করে আনতে বলি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।
এ বিষয়ে মিটফোর্ড হাসাপাতালের এসও ইলেক্ট্রিকে কর্মরত কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এটি সেন্ট্রাল গ্রিডের সমস্যা, এই হাসপাতালেও একই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। সেন্ট্রাল থেকে এটি সমাধান না হলে আলাদাভাবে ২২০-২৫০ ভোল্ট সাপ্লাই দেয়া সম্ভব না। ভোলটেজ ১৮০-১৯০ বা এর কম ভোলটেজে “রক্ত পরীক্ষা ও প্লাটিলেট বিভাজনের মেশিন” চালানো সম্ভব না। এর বিকল্প হিসেবে অটোমেটিক ভোলটেজ রেগুলেটর মেশিন ম্যানেজ করা গেলে এই মেশিন চালানো সম্ভব। এর জন্য সাত থেকে আট দিন আগে একটি দরখাস্ত দেয়া হয়েছে।
এদিকে ট্রান্সফিউশন মেডিকেল বিভাগ ব্লাড ব্যাংকের সহকারী অধ্যাপক ডা. ওয়াসিম বলেন, এটা কতদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে তা আমি বলতে পারব না। আমি কিছুদিন আগে এখানে বদলি হয়ে এসেছি। এসেই জানতে পেরেছি যে, রক্ত পরীক্ষার ও বিভাজনের মেশিনটায় সমস্যা আছে, ঠিকমত লোড টানতে পারে না। তাই বিকল্প হিসাবে কিছু কিছু রক্ত পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল বা ব্লাড ব্যাংকে যেতে বলা হয়।
এক ভুক্তভোগী বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪দিন ধরে আমার মেয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। চিকিৎসক রক্তের সাদা অংশ লাগবে বলে জানিয়েছে। রক্ত সংগ্রহ করে প্লাটিলেট বিভাজনের জন্য মিটফোর্ড হাসাপাতালের ব্লাড ব্যাংকে গেলে সেখান থেকে বলা হচ্ছে তারা রক্তের সাদা অংশ বিভাজন করতে পারবেন না। তাদের মেশিন কাজ করে না। তারা বলছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অথবা শান্তিনগরের কোয়ান্টামে গিয়ে রক্তের প্লাটিলেট বিভাজন করে সাদা অংশ নিয়ে আসতে হবে। এটা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য খুবই কষ্টকর ।
সম্পাদনা : তাসকিনা ইয়াসমিন/রাকসাম
আপনার মতামত লিখুন :