নূর মাজিদ : যুক্তরাষ্ট্র-চীন বানিজ্যযুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় তা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, এই অঞ্চলের অর্থনীতিগুলোর ওপর মার্কিন-চীন বাণিজ্য বিরোধের ক্রমাগত আঘাত দ্রুত স্পষ্ট হয়ে উঠছে। খবর বিবিসি।
রপ্তানি নির্ভর কয়েকটি শক্তিশালী এশিয় দেশের সা¤প্রতিক রপ্তানি চিত্রের দিকে তাকালেই এই অবস্থা আরো ¯পষ্ট হয়ে ওঠে। সিঙ্গাপুরের রপ্তানি জুনে টানা দ্বিতীয় মাসের ন্যায় সংকুচিত হয়েছে। জুনে দেশটির গড় রপ্তানি ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ কমে। গত সপ্তাহে দেশটির অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এই অবস্থা সামনে আসে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, প্রথম প্রান্তে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি রপ্তানি কমার কারণে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ কম হয়েছে।
মালয়েশিয়ার বেসরকারি ব্যাংক সিআইএমবির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক অর্থনীতিবিদ সং সেং উন বলেন, ‘পুরো এশিয়া অঞ্চলে একই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এমন এক সময় বাণিজ্যযুদ্ধ হচ্ছে, যখন ১০ বছর ধরে তুলনাম‚লক স্থিতিশীল থাকার পর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি আবার গতি হারাতে শুরু করেছে। এমনকি এই মুহূর্তে যদি কোনো অলৌকিক ঘটনায় বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধও হয়ে যায়, তার পরও এরই মধ্যে যা ঘটছে, তার নেতিবাচক প্রভাব খুব একটা কম হবে না।’
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার জুনের অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দুঃসংবাদ হিসেবে দেখা হচ্ছে। চলতি বছরের জুনে দেশ তিনটির রপ্তানি প্রবৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে হতাশাজনক ছিল।
চলতি বছরের জুনে গত নয় মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো ভারতের রফতানি ৯ দশমিক ৭ শতাংশ হ্রাস পায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অপর উদীয়মান অর্থনীতি ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিও ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ হ্রাস পায় গত বছরের একই সময়ের তুলনায়। চীন দেশটির বৃহত্তম বৈদেশিক বানিজ্য অংশীদার । এছাড়াও, গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি কমেছে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
এ তিন দেশের প্রতিটিই পাম তেল ও রাসায়নিক থেকে শুরু করে সেমিকন্ডাক্টর পর্যন্ত নানা প্রকার পণ্য চীনের কাছে বিক্রি করে থাকে। চলতি সপ্তাহে এশিয়ার শীর্ষ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন প্রায় তিন দশকের সর্বনিম্ন ত্রৈমাসিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। বাণিজ্যযুদ্ধসংক্রান্ত বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ আংশিকভাবে দেশটির প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা অর্ধেকের বেশি পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রা¤প। এর অর্থ, চীনা কোম্পানিগুলোকে ক্রেতাদের কাছে কমমূল্যে পণ্য বিক্রি করতে হবে অথবা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পণ্য বিক্রি কমাতে হবে। যার মানে হলো, যেসব দেশ চীনা কারখানাগুলোর জন্য কাঁচামাল ও অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করছে, তাদের বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে অচিরেই এই পরিস্থিতির অবসান হবে এমন ল²ণও দেখা যাচ্ছেনা।
আপনার মতামত লিখুন :