নূর মাজিদ : আসামে তথাকথিত অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসী শনাক্তকরণের মাধ্যমে নতুন করে নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রণয়নের যে উদ্যোগ ভারত নিয়েছে তার প্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার। ঢাকা বরাবরই বলে আসছে কোন অবৈধ বাংলাদেশী ভারতের কোন রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেনি। যার প্রেক্ষিতে নয়াদিলী¬ এনআরসির মাধ্যমে যাদের অবৈধ নাগরিক অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে তাদের কোন দেশে ফেরত পাঠানো হবে, সেই ব্যাপারে কোন ব্যাখ্যা দেয়নি। সূত্র : স্ক্রল ডটইন।
তবে ভারত ব্যাখ্যা না দিলেও দেশটির বিজেপি সরকারের প্রভাবশালী নেতারা প্রকাশ্যেই আসামের বাংলাভাষী মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বিতারিত করে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেয়ার প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে স্বয়ং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ নিজেই আসামের মুসলিম জনগোষ্ঠীকে অনুপ্রবেশকারী মুসলিম বাঙ্গালি বলেন। এবং তাদের ঘুনপোকা আখ্যা দিয়ে নির্মূল করার অঙ্গীকার করেন।
এই অবস্থায় এনআরসি তালিকা পুরোপুরি স¤পন্ন হলে তার প্রতিক্রিয়া নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা। এমনটাই মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমিন। গত ১৩ জুলাই দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেম, ‘আমরা কেন উদ্বিগ্ন হব না? এনআরসি নিয়ে প্রতিটা সংবাদ শুনে উদ্বেগের মাত্রা আরো বাড়ে। ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই মহাবিপদে আছি। জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীর মাঝে শীর্ষে। আর কোন বাড়তি আপদ আমরা নিতে পারব না।’
এই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এনআরসি প্রক্রিয়ায় যাদের অবৈধ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা যে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী এমন দাবী স¤পূর্ণ নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘এরা ৭৫ বছর ধরে ভারতে আছেন। তারা এখন আমাদের নয় বরং ভারতেরই নাগরিক ।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাধ্যমে এই প্রথম বাংলাদেশ সরকার প্রকাশ্যে এনআরসি প্রক্রিয়ার ত্রæটি নিয়ে সমালোচনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের সবচাইতে বড় ধর্ম নিরপেক্ষ ওয়েবসাইট স্ক্রল ডটইন এই শিরোনামেই সংবাদ প্রকাশ করে।
উলে¬খ্য, এনআরসির প্রথম খসরা তালিকায় ৪০ লাখ বাংলাভাষী ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশী হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ২০১৮ সালের শেষে। বাংলাদেশ এই তালিকার সঙ্গে তাৎক্ষনিকভাবে নিজের সকল স¤পর্ক অস্বীকার করে। তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, এই তালিকার সঙ্গে বাংলাদেশের কোন সংযোগ নেই। ভারত সরকার এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোন আলোচনাও করেনি। এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এই বিষয়ে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে আলোচনা করার মতো কোন ইচ্ছেও আমাদের নেই।
আপনার মতামত লিখুন :