কামরুল হাসান মামুন: বরগুনার নয়ন বন্ডকে ক্রস ফায়ারে দেয়া মানে এক ঢিলে দুই পাখি মারা। এতে গড ফাদারদের নাম বেরিয়ে আসা থেকে রক্ষা পাওয়া আর স্ট্যান্টবাজি করে পাবলিককে খুশি করা। নয়ন বন্ডরা তৈরি করাই হয় প্রয়োজনে আকাশে তুলে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য, আবার প্রয়োজনে পাতালে পুঁতে ফেলেও নিজেদের স্বার্থরক্ষা করার জন্য। এরা rootless হয়। রিফাত হত্যায় নয়ন বন্ড ছাড়াও সম্ভাব্য আরও ১১ জন আসামির নাম আছে। তাদের মধ্যে কেউই তেমন rootless না। তাদের অনেকেরই মামা-খালু ক্ষমতার চেইনে। রিফাত হত্যা আর নয়ন বন্ডের ক্রসফায়ারের পর রিফাতের স্ত্রী মিন্নি আলোচিত হয় সাহসী মেয়ে হিসেবে।
কিন্তু সেও তো rootless! এ রকম rootless একটি মেয়ে কীভাবে আকাশছোঁয়া ভালোবাসা পায়? তাই আবার এক ঢিলে দুই পাখি মারার পরিকল্পনা। এ ধরনের সকল পরিকল্পনা কিন্তু হয় একটি কেন্দ্র থেকে। এই গড ফাদাররা বুঝে ফেলে বাকি আসামিদের বাঁচানোর একটিই রাস্তা। সেটি হলো আলোচনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা যাতে সকলের দৃষ্টি যায় ওই দিকে। আর এই পরিকল্পনার বলির পাঠা হতে পারে মিন্নি, কারণ সে rootless! অত্যন্ত সুচতুরভাবে সব কিছু করা হয়। প্রথমেই মিন্নির শ্বশুরকে দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে শ্বশুরের মাধ্যমেই অভিযোগটি আনা। এ দেশে স্বামী মারা গেলে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর আর জায়গা হয় না। শ্বশুর ভেবেছে ক্ষমতাবানদের সঙ্গে থাকাই বরং এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি লাভজনক। তাই দেখা গেছে শ্বশুরের সাংবাদিক সম্মেলনে এমপিপুত্র প্রেসক্লাবে সারাক্ষণ উপস্থিত ছিলেন! কেন? এই এমপিপুত্রই মানববন্ধনে সরাসরি মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান! কেন?
ডেইলি স্টারের রিপোর্টেও জেনেছি, এই এমপিপুত্রই বরগুনার সকল ক্রিমিনাল কাজের কলকব্জা নাড়ার জন্য নানা গ্রুপ তৈরি করেছে। তার হাত ধরেই নয়ন বন্ডরা জেলে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে মুক্তি পেয়ে যায়। শুনেছি এই এমপিপুত্র সুনাম দেবনাথ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে খুনিদের পক্ষে আদালতে কেউ না দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। আমরা দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে জানি এমপি থেকেও এমপিপুত্ররা কতো পাওয়ারফুল। কার ঘাড়ে দুটো মাথা আছে যে এখন মিন্নির পক্ষে কোনো উকিল দাঁড়াবে? সব কিছু বিচার করলে আমার মতে সকল কিছুর গোড়া তো এই এমপিপুত্র। তাকে না ধরলে গোটা সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :