শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ১৯ জুলাই, ২০১৯, ০৭:১৮ সকাল
আপডেট : ১৯ জুলাই, ২০১৯, ০৭:১৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে কোনো সময় সংঘাতের শঙ্কা

ডেস্ক রিপোর্ট  : নেপাল ও ভারতে বন্যার পানি বাড়ছে। এ নিয়ে দেশ দু’টি একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু করেছে। ফলে দুই দেশের সম্পর্কে উত্তাপ বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বন্যার বিষয়টি আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এমনকি এ নিয়ে যে কোনো সঙ্ঘাতের সূচনা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পানি সম্পদের বিষয় বিবেচনা করলে নেপাল এবং ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক কখনোই সহজ ছিল না। সা¤প্রতিক সময়ে বর্ষাকালে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরো খারাপ হতে শুরু করেছে। চলতি বছর বন্যা পরিস্থিতি এই অঞ্চলে বেশ খারাপ আকার ধারণ করেছে। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্কে আরো উত্তাপ ছড়িয়েছে এই বন্যা পরিস্থিতি। সীমান্তের দুই পাশের বাসিন্দারা নিজেদের দুঃখ-কষ্টের জন্য পরস্পরকে দায়ি করছে।

ভারত এবং নেপালের মধ্যে প্রায় এক হাজার ৮০০ কিলোমিটার অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে। নেপাল থেকে ভারতের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ছয় হাজার নদী ও জলধারা প্রবাহিত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ভারতের গঙ্গা নদীতে প্রায় ৭০ শতাংশ পানি আসে নেপাল থেকে প্রবাহিত এসব নদী এবং জলধারা থেকে। যখন এসব নদীতে পানি বেড়ে যায়, তখন নেপাল এবং ভারতে বন্যা দেখা দেয়।

গত কয়েক বছর ধরে ভারত তার সীমান্তের ভেতরে বাঁধ নির্মাণ করায় নেপালের সীমান্তে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কারণ, নেপাল থেকে ভারতের দিকে যে বন্যার পানি প্রবাহিত হয় সেটিকে আটকে দেবার জন্য এসব বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। দুই বছর আগে নেপালের পূর্বাঞ্চলে গিয়ে বিবিসি দেখতে পায় যে শুধু বন্যার পানি আটকে দেবার জন্য ভারতীয় অংশে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এই বাঁধ নিয়ে নেপালের দিক থেকে আপত্তি তোলার পর ২০১৬ সালে সীমান্তে উভয় দেশের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল।

নেপাল বলছে এ ধরণের ১০টি বাঁধ রয়েছে যেগুলো নেপালের ভেতরে হাজার-হাজার হেক্টর জমি প্লাবিত করছে। এদিকে ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, সীমান্তে যেসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো রাস্তা। কিন্তু নেপালের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব স্থাপনা প্রকৃত পক্ষে বাঁধ। যার মাধ্যমে ভারতের গ্রামগুলোকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করা হচ্ছে।

নেপালের দক্ষিণাঞ্চলে গাউর নামক এলাকা গত বেশ কয়েকদিন যাবত পানিতে প্লাবিত। কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন এ নিয়ে যে কোন সঙ্ঘাতের সূচনা হতে পারে। নেপালের আর্মড পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা কৃষ্ণা ধাকাল বলেন, অনেক আতঙ্কের পর ভারতীয় অংশে বাঁধের কয়েকটি গেট খুলে দেয়া হয়েছে এবং এতে আমরা উপকৃত হয়েছি।

ভারতীয় কর্মকর্তারা এ নিয়ে কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি। দুই দেশের কর্মকর্তারা এ বিষয়টি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে আলোচনা করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাতে কোনো ফলাফল আসেনি। নেপাল এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্কে আরো উত্তাপ ছড়িয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। নেপালের আলোচক এবং ক‚টনীতিকরা নিজ দেশের ভেতরে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছেন। অনেকে মনে করেন নেপালের কর্মকর্তারা ভারতের কাছে বিষয়টি কার্যকর ভাবে তুলে ধরতে পারছেন না।

কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে ভারতীয় অংশে কোন বন্যা হচ্ছে না। ভারতের বিহার রাজ্যে প্রায় ২০ লাখ মানুষ এ বছর বন্যার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কোশি এবং গÐক- এই দুই নদীতে যখন পানি বৃদ্ধি পায় তখন বিহারে বন্যা পরিস্থিতি নাজুক আকার ধারণ করে। এই দুই নদী গঙ্গায় গিয়ে পড়েছে। ভারতীয় অংশে বন্যার জন্য নেপালকে দায়ি করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সীমান্তে নদীতে যে বাঁধ দেয়া হয়েছে সেটি পরিচালনা করে ভারত সরকার। এই বাঁধ যদি নেপালের অংশেও হয়, তবুও ভারত সরকার এটি পরিচালনা করে। এই বাঁধগুলো প্রধানত নির্মাণ করেছে ভারত। উদ্দেশ্য হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ কাজ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন। কিন্তু নেপালের মানুষ মনে করছে, এতে তাদের কোনো উপকার হচ্ছে না।

অন্যদিকে ভারত সরকার এসব বাঁধকে একটি ভালো উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করছে। কোশি নদীতে যে বাঁধ দেয়া হয়েছে সেখানে ৫৬টি বন্যা নিয়ন্ত্রণ গেট রয়েছে। নেপালের অভিযোগ, বর্ষাকালে এ নদীতে যখন পানি বিপদসীমায় পৌঁছে যায়, তখন ভারত সেসব গেট খুলে দেয় না। ফলে নেপালে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়। উল্লেখ্য, এই কোশি নদী দীর্ঘ সময় ‘বিহারের দুঃখ’ হিসেবে পরিচিত ছিল।

নেপালের অনেক নদী চুর পর্বতমালার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই পর্বতমালার প্রতিবেশ এরই মধ্যে হুমকির মধ্যে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, পানি নিয়ে ভারত এবং নেপাল- এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বিষয়টি আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়